শুক্রবার ১লা জ্যৈষ্ঠ ১৪২৭, ১৫ই মে ২০২০
সাজ্জাদ সাঈফ
তমা সিরিজ: ছায়া
ছায়া-ছায়া বিকালের পিছনে
তোমার আঁচল ছড়িয়ে থাকে।
ওই ছায়াটুকু আমার লেখায়
ঘন কালি হয়ে নামে।
জানো নাকি তমা?
সুদেব চক্রবর্তী
বাজিকর
আমি তো চ্যাং পুং করা শাং বংশীয় নাগড়!
অন্তঃপুরে রমনীদের কাছে শিখেছিলাম
ক্যাসিনোর যাবতীয় ফাটুস ফুটুস...
লোডশেডিংয়ের বাংলায় কে বসে আছো সলিটেয়ার খুলে? সেট হয়ে থাকো- উপসেট হবার জন্য মগজে চলছে
গরিষ্ঠ সাধারণ গুনিতকের লাল দৌড়।
স্পেডের টিক্কা জুটলেই চলে আসব
গ্যাম্বলিং টেবিলে- এসো পাঞ্চালী,
মিটিয়ে দেবো কুরুক্ষেত্রের সব অপমান।
রাবাত রেজা নূর
প্রচলনের বিপরীতে
শত কথার নৈবেদ্য দিয়ে
সাজাতে চাই কবিতার ডালি
কখনও খুশি ঝলমলে, কখনও চোখের জলে।
হোকনা যতই বিবর্ণ, রঙচটা!
নাইবা জায়গা পেলো পেটমোটা কাগজে
নামীদামীদের মতো--- ছোঁবে না
জনপ্রিয়তার কলংক।
এন যোগাতে চাই না, মন জাগাতে চাই
এ সন্ধিক্ষণে তারুণ্যের ক্লান্ত শিরায়
জ্বালাতে চাই বোধের বাতি
স্বপক্ষে নাই বা পেলাম
শাসক রাজা প্রতিষ্ঠান।
বর্তমানের সংকট আর ভবিষ্যতের ভাবনা
তাড়িত করে কবিকে
নাম, যশ, খ্যাতি, উপঢৌকন
এর জন্যই কী কলম চালানো?
এ অভিযাত্রা তারুণ্যর বিস্ফোরণ
সমাজে শতফুল ফোটানোর প্রচেষ্টা
চকচকে প্রচলের বিপরীতে।
হাসানুজ্জামিল মেহেদী
শরণার্থীর চিঠি
ঝলসানো পৃথিবীর মুখ,
অন্ধকার শহরে জ্বলে উঠে অসংখ্য বারুদ।
প্রেসিডেন্ট, আমি শরণার্থী। আমার কান্না শোন,
অসংখ্য দুপুরে আমি ভাসমান মানুষ,
তোমাদের শহরে বেঁচে থাকি খেয়ে
বীভৎস রোদ।
বৈরুত - বেথেলহাম, কাবুল- দামেস্ক, সমুদ্র- মরুভ‚মি,
সোনালী প্যাগোডার দেশে মৃত্যু উপত্যকা আরাকান,
বুলেটবিদ্ধ মানবতা, অভুক্ত কুকুরের মতো বেঁচে থাকি।
জ্বলে গেছে শহর, দালান।
কাঁটাতার পেরিয়ে চলছি,
বাচ্চারা বড় হচ্ছে, এখন তারা মানুষ কিংবা শরণার্থী।
আমরা আবার বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বো,
নতুন শিবির আর কত দূর?
বাচ্চারা জানেনা তার বাবার ছিলো গ্রাম জোড়া শস্যের ক্ষেত,
দক্ষিণ হাওয়ার বাগান বাড়ি।
সে জানে পৃথিবী মানেই শরণার্থী শিবির,
যুদ্ধ, রক্ত, মৃত্যু, লাশের সারি।
একবিংশ শতাব্দীতে বেওয়ারিশ বাঁচতে খুব লজ্জা হয়।
এ চিঠি ভাসতে থাক,
যুদ্ধ, শান্তির সঙ্গমে জন্ম নিক এক ভিন্ন পৃথিবী,
হোক শান্তির জয়,
শরণার্থী বাস্তু পাক।
মাহমুদ হাসান আবির
ক্যাকটাসফুল
পৃথিবীর জীবনবৃত্তান্ত যে জিরাফের গায়ে লিখা হয়েছিলো, তাকেম্যারিলিন মুনরো বলা যেতে পারে। তিনিও সোমবারকে সমানভাবেই হিংসে করে গেছেন, সারাদিন জানলা খুলে রাখবার অপরাধে। ক্যাকটাসের চারা রোপণ সম্বন্ধে একটি প্রামাণ্যচিত্র রোপণ করার ইচ্ছা পোষণ করেছিলেন সম্ভবত।
ক্যাকটাস ফুল হলো একটি ফ্যাসিবদী ফুল, মৃত গন্ধের জন্য বিখ্যাত।
মূল: জঁ ককতো
ভাষান্তর: কায়েস সৈয়দ
মুখবন্ধ (একটি আরস কবিতার জন্য খসড়া)
চলো খুলে ফেলি আমাদের স্বপ্নগুলো
কাঁচের কপচানো থেকে মুক্ত
ও মূল গাছ থেকে দূরে
রাইয়ের দানা
রোপন করেছি
একে
আমি
অঙ্কুরিত হবে
ভুলে যাবে
চাষাড়ে উৎসব
বিষ্ফোরক শব্দটি
ঘনবসতি প্রজন্মের মধ্য দিয়ে
চিরন্তন হয়ে যায়
নির্দোষভাবে
এবং কিছুই বোঝে না নিজের ছাড়া
মিষ্টি-সুবাসিত ডিনামাইট
সম্ভাষণ
বাতিল করে দেই
স্পষ্টতুল্যতা, খালি পাল ও ফোলা পাল
যার ফলে জাহাজ
হারিয়ে ফেলে তার পথ
আমার দোয়াতকলমের খাঁচ
এবং সেখানে
এবং সেখানে
এবং সেখানে
এবং
সেখানে
ঘুমায়
প্রগাঢ় কবিতা
আয়নাখÐ-খচিত পোশাক
ধুয়ে নিচ্ছে বরফের তলা
ছোট্ট এস্কিমো মেয়েটি
স্বপ্ন দেখে
আদ্র নিগ্রোদের
একটি স্তুপে দাঁড়িয়ে
তার নাকটি
স্বপ্নময় ক্রিসমাসের
জানলা-কাঁচের বিপরীতে
সমতল হয়ে ছিলো
বর্ণীয় জলসিক্ত রেশমখচিত
একটি সাদা ভালুক
নিজেকে শুকিয়ে নেয় নিশীথ সূর্যে
কবিতার চরণ
বিলাসিতার বিশাল সমাহার
জ্বলজ্বল করে আস্তে আস্তে
এর সমস্ত আলো
এবং সন্ধ্যার পোশাকের বলটি ডুবে যায়
প্রাসাদের হোটেলের হাজারো আয়নায়
এবং এখন
আমিই তা
বিস্ময়কর ঘটনার কৃশ কলম্বাস
আয়নাখÐ-খচিত ওয়্যারড্রপের
সামনে
একাকী
আর তা একটি চাবি দিয়ে লক করা
শূন্যতার দুর্দমনীয় শ্রমিক
তার উর্বর খনি ব্যবহারের দুঃসাহসিক কাজ
রুক্ষ সম্ভাবনা
সাদা পাথরের সাথে মিশে
চকচক করে সেখানে
ওহ
পাগলা ঘুমের রাজকন্যা
শিঙার আওয়াজ শোনো আমার
আর বন থেকে তোমাকে দিলাম আমার
শিকারী কুকুরের দল
যেখানে আমরা এসেছি জাদুমন্ত্রের উপর
আমরা এখানে এসেছি
কলমের সাহায্যে
একে অন্যের সাথে
পরিণীত
পৃষ্ঠায়
আরিয়াদনির দ্বীপপুঞ্জ কান্না
আরিয়াদনিকে টেনে নিয়ে চলেছে
আরিয়াদনির নামমুদ্রা
দৌঁড়াতে ও জাগরিত হতে অন্য কোথাও
বিশ্বাসঘাতকতা করেছি কবিতার স্তবকের সাথে
পরিকল্পনা করিনা কোনো স্থাপত্য
কেবলমাত্র
বিটোফিন তোমার মতো
বধির
হোমার তোমার মতো
অন্ধ
অগনিত বৃদ্ধ জন্মগ্রহণ করে সর্বত্র
সম্প্রসারিত করি আমি
বৃক্ষহীন তৃণভূমির অন্তর
নীরবতা
এবং
উদ্দেশ্যের কাজ
কাজের কবিতা
কবিতার স্তবক
স্তবকের দল
দলের শব্দ
শব্দের অক্ষর
এবং অক্ষরের ক্ষুদ্রতম বক্রাক্ষর
এটা তোমার অতন্দ্র
রেশমিকাপড় পায়ের পাতা
যাকে রাখি গোলাপি অবস্থানে
শূন্যের দ্বারা চূষিত
আঁটসাঁট ভ্রমনকারী
বামে ডানে
ঝাঁকুনি দেয় ঈশ্বর
আর আমি হাঁটতে থাকি
অসীম সতর্কতার সাথে অন্যদিকে
No comments:
Post a Comment