মঙ্গলবার ১লা বৈশাখ ১৪২৭, ১৪ই এপ্রিল ২০২০
কবিতা
সরকার অরুণ কুমারস্বপ্ন প্রত্যাশাএসো হে বৈশাখসোনা রঙ মেখে সবুজ আঙিনায়সত্য উচ্চারণে --+++ছড়াও সুগন্ধি সৌরভ।মুঠো মুঠো স্বপ্ন ছড়িয়ে দাওরোদেলা উঠোন আর পলিমাখা ঘরেপ্রীতি পাক অনেক নিঃশ্বাস নিবিষ্ট চিত্তে।বসন্তে দোলে পাতারঙ লেগে থাকে বাতাসের গায়তুমি এক বিস্ময়......যেখানে পাপ থাকে নামেঘের বাড়ি থেকে নেমে আসে হাসনাহেনা ভোর।সকালে ঘুম ভাঙে একরাশ প্রত্যাশায়অপেক্ষা করি একটি দিনেরদূর হোক দুঃখ জঞ্জালফুল চঞ্চলতায় হেসে উঠুক আহত অতীততোমার চোখের ভাষায়।আবু জাফর সৈকতশিখে নিয়েছি উত্তরআর নয় নমঃ নমঃজ্বলে উঠুক নীল চোখহারানোর ভয়ে আর কতো শোকজের উত্তরপুরাতন বাধনগুলো ছিড়–ক একে একেসোজা হোক দীর্ঘ মেরুদন্ডহাঁটতে শিখিকরুণা চাই না আরআমিতো গোলাম নই কোনকাজী শোয়েব শাবাবতুমি আর তোমার শহর ছেড়ে আসার পরচলে যাচ্ছিচলে যাচ্ছি বহুদূরকখনো কর্তব্য বড় বেশি নিষ্ঠুরÑপেছনে তুমি, তোমার শহর আরবুকের ভেতর দীর্ঘ হাহাকার!কী যেন ফেলে এসেছি কোথাও...কী যেন ফেলে এসেছি কোথাও...বিনয় কর্মকারনিছক কবিকাঁকর বাছতে-বাছতেই পার হয় ভাতবেলা।শেষ-ট্রেন মিস করে, প্ল্যাটফর্মকেই ভালোবেসে ফেলে কবি।আর মানুষই মানুষকে ভাবে বোকা!অথচ গন্তব্য কিংবা প্ল্যাটফর্ম;উভয় থেকেই মৃত্যুর দূরত্ব সমান।ম্রিতোষ তত্রাচন/২০১২১৯শুনতে প্রস্তুত না আপনিকেউই প্রস্তুত নাএমন কি আমিও নাকি কথা বলা যায় বলুন তো!কি কথা বলতে চাইকান মুখের কথা শুনতে প্রস্তুত নানা প্রস্তুত হবে না কোনদিনইমগজে সেট করা আছে কিছু (ফালতু) নির্দিষ্ট শব্দ(নতুন) ভিন্ন শব্দ তার শয়নারফিকুল কাদিরপ্রতিক্ষাআমি তার প্রতিক্ষায় আছিবেঁচে থাকা শুধু তার জন্যবাঁচার তৃষ্ণা শুধু তার জন্যবাঁচার চেষ্টা শুধু তার জন্যসমস্ত প্রচেষ্টার অগ্রভাগে সেতার কাছেই বাঁধা পরে আছিআমার অশ্রুআমার বিষাদআমার বিষণœতাসময়ের ঐ পারে ঘড়ি টিকটিক করেবলাকা হলের দিকে তাকিয়েআলতো করে চিন্তা করে রাফিন প্লাজার দোতলাসুইটের হাসি শুনতে পাইতার ভালোবাসা দেখতে পাইসে আমার কাছে আহ্লাদ করেভালোবেসে তেলতেলে চোখে তা দেখিভালোবাসলে মানুষ অস্থির হয়সুইট অস্থির হয়ে হাঁটেআমারও কোথায় জানি রিনরিন শব্দ পাইওকে আদর করতে ইচ্ছে হয়আমার সমগ্রতা জুড়ে দখল থাকে অন্য কারওসে সমগ্রতায় মা-বাবা, ভাইবোনআত্মীয়, বন্ধু, সুইটের হাসি ইত্যাদিআরও কতো কি!আমাকে ঘিরে থাকে, রাজত্ব করেসে-যাকে কাছে পেলে ঘুম পায়নিশ্চিন্তে কোলে মাথা রাখা যায়কিছু বলি না, চলি নাকেবল কাঁধটা তার কাঁধে হেলে যায়জানিনা, ভালোবাসা কি একে বলা যায়।অণুগল্পমহিম জেগে ওঠোকবির বিটুহঠাৎ দীর্ঘ পথ হেঁটে হেঁটে যখন পা'টা একটু ধরে এসেছে, মহিমের সে মুহূর্তে খেয়াল হয় সে কেমন একটা চেনা অচেনায় মেশানো জায়গায় চলে এসেছে। মানুষের কোলাহল নেই, রিকশার ঘন্টি, গাড়ির শব্দ অথবা কোনো কিছুর গন্ধ, কিছুই তার গোচরে আসছে না যেনো।মহিম অনুমান করার চেষ্টা করে জায়গাটা কোথায়। এমন নির্ঝঞ্ঝাট জায়গা শুধু স্বপ্নেই দেখা যায়, হঠাৎ মনে উঁকি দিয়ে যায় -আমি স্বপ্ন দেখছি না তো? পরমুহূর্তেই হেসে ওঠে। এমন ভাবনা ভাবার যথেষ্ট কারণ থেকে যায়। স্বপ্নকে যেমন অনায়াসেই জেগেই আছি ভেবে নেয়া যায়, তেমন জেগে থেকেও উৎকণ্ঠা স্পর্শ করে যায় - এ স্বপ্ন নয়তো! মহিম মনে করার চেষ্টা করে কোথায় যাচ্ছে সে। ঠিক মনে পড়ছে না। - ঠিক আছে অসুবিধা নাই হাঁটতে থাকি, মনে পড়ে যাবে।'এমন করেই আজকাল ভাবনার অভ্যাস হয়ে গেছে। কিন্তু গন্তব্য মনে করতে না পারলে কোন দিকে হাঁটবে সে। একটু দাঁড়ায় গাছের ছায়ায়, চোখে পড়ে দুটি সদ্যোজাত কুকুরের বাচ্চা বেঘোরে ঘুমায় একটা আরেকটার শরীরে শরীর ডুবিয়ে। - দু'টো কেনো, আর বাচ্চা ক? মহিম এদিক ওদিক তাকায়। বাকি বাচ্চাদের খোঁজে। বাচ্চাদের মাকেও। শীত শীত লাগছে শরীরে - আহারে বাচ্চাগুলো নিশ্চই রাতে খুব কষ্ট পেয়েছে! - আশেপাশে ময়লার ভাগারওতো চোখে পড়ছেনা, বাড়ি ঘরের চিহ্নও নেই। মহিম আটকে পড়ে এখানে। পাশ দিয়ে একজন মানুষ চলে যায়, ঠিক ভাবে তাকালে চোখে পড়তো দুজন দিনমজুর একটু দূরে দাঁড়িয়ে স্যান্ডেল হীন মহিমের দিকে খুব কৌতুহল নিয়ে তাকিয়ে আছে। হঠাৎ একটি পোয়াতি বিড়াল লাফ দিয়ে নেমে আসে কোথা থেকে যেন। সেদিকে তাকিয়ে বাচ্চা দুটোর মাকে পাওয়া গেলো মনে করে বসে মহিম। কোনো খটকা নেই, অসামঞ্জস্যও মনে হয় না। মহিম দেখে কি সুন্দর আকাশ চেয়ে আছে তার দিকে।হঠাৎ পেটটা মোচড় দিয়ে ওঠে, সে দ্রুত বাড়ি ফেরার রাস্তা খোঁজে, অথচ মনে পড়ে না। এরপর দৃশ্য পাল্টে সামনে ধূধূ শুন্যতা। চোখে পড়ে কারা যেন হেঁটে যায়, হুস করে পেছন থেকে উড়ে যায়, তারপর তার পুরো শরীরটার দখল নিয়ে নেয়। মহিম গোঙায়- আমি বাড়ি যামু। নিজের কাছেই নালিশ করে আমি বাড়ি যামু। ক্ষুধা লাগছে। কিছুতেই মনে করে উঠতে পারে না কিভাবে বাড়ি ফিরবে সে। একটু অনিশ্চিত আশংকা নিয়ে নিজেকে প্রবোধ দেয় -এটা স্বপ্ন, এটা স্বপ্ন। নিশ্চই আমি জেগে উঠবো...ভাষান্তর: কায়েস সৈয়দ
হোর্হে লুইস বোর্হেস এর দুইটি কবিতাবৃষ্টিহঠাৎ করেই শেষ হয়ে যায় সন্ধ্যাএখন যেমন করেঅল্প গুড়ি গুরি বৃষ্টি ঝরছে বাইরেঝরছে অথবা ঝরেছে, বৃষ্টি নিজে কিছুই নয়নিঃসন্দেহে যা অতীতে ঘটে যায়যে শোনে এর ঝরে যাওয়া তাকে মনে করিয়ে দেয়এমন একটি সময় যার মধ্যে আছে অদৃষ্টের পরিহাসফিরিয়ে আনে তার জন্যে ফুল যার নাম ও গোলাপ’এবং এর লাল রঙের হতবুদ্ধ লালভাববৃষ্টি যা ছড়িয়ে দেয় জানালার কাচে তার বেপোরোয়াউজ্জ্বল করা আবশ্যকভুলে যাওয়া শহরতলীআঙুরের গাছে লুকিয়ে রাখা কালো আঙুরবহিঃপ্রাঙ্গণ নেই এখন আর, সন্ধ্যার বৃষ্টিএনে দেয় কণ্ঠস্বর, আমার বাবার প্রিয় কণ্ঠস্বরযে ফিরে আসেন এখনও, যে মারা যাননি কখনওবিচ্ছেদতিনশো রাত তিনশো দেয়ালের মতোউঠতে হবে অবশ্যই আমি ও আমার ভালোবাসার মধ্যেএবং সমুদ্র আমাদের মধ্যে হয়ে উঠবে ব্ল্যাক আর্টঅবশিষ্ট থাকবে না কিছুই, স্মৃতি ছাড়ারাতগুলো তোমাকে দেখার প্রত্যাশীআমার পথ বরাবর ক্ষেত্র, মহাশূন্যযা আমি দেখছি ও হারাচ্ছি...মার্বেলের মতো চূড়ান্ততোমার অনুপস্থিতি বিষণœ করে তুলবে অন্যান্য দুপুরপুনর্পাঠশক্তি চট্টোপাধ্যায়পোড়ামাটিমন্ত্রের মতন আছি স্থিরদূরে যাওথেকো না এখানেচিরদিন উড়ন্ত শাম্পানেছন্নছাড়াচিঠি তো পুড়েছে একতাড়াআগুনে পুড়েছে শত পাড়াদূরে যাওথেকো না এখানেদূরে যাওথেকো না এখানেকাকে পাও?আমি যাইযেখানেই থাকোএপথে আসতেই হবেছাড়ান্ নেইসম্বল বলতে সেইদিন কয়েকের গল্পঅল্প অল্পইআমি যাইতোমরা পরে এসোঘড়ি-ঘন্টা মিলিয়েশাক-সবজি বিলিয়েতোমরা এসোছিন্নবিচ্ছিন্নজ্বলন্ত রুমালতুমুল বৃষ্টিতে সব পাতা ভিজে গেলোএখনই শুকাতে হবে রোদ্দুর কোথায়?তিজেলে চড়াতে হবে অন্ন, তা কোথায়?মানুষ বৃষ্টিতে ভিজে শুকাতেও জানে।এই অন্ন, পাতা-পত্র, এর অন্য মানে।
No comments:
Post a Comment