Monday, May 25, 2020

শিল্প সাহিত্য ২৮

সোমবার ২৮শে বৈশাখ ১৪২৭, ১১ই মে২০২০



কবিতা
অনার্য নাঈম
বিরাম চিহ্নের নীতিমালা

তোমার মুখমণ্ডলকে রেখে দিই উর্ধ্ব কমার মাঝে
কালের উদ্ধৃতি জেনে-
নিরপরাধ সময় পার করি ওদিকে তাকিয়ে;
গ্রীবা থেকে নাভিমূলে এসে ব্যবহার করি কমা
কেননা ওখানে ক্ষণিকের জন্য থামতে হয়; থামি।
নিয়মের লঙ্ঘন করে কখনো
রাষ্ট্রীয় আইনের মুখে থুথু দিই;
থুথুতে আইন ভিজে নরম হয়ে যায়;
আমি নীচে নেমে আসি;
সেমিকোলন দিয়ে দিয়ে একটি বাক্যের পর
আরেকটি বাক্য লিখি।
বক্তব্যের প্রয়োজনে ড্যাশ চিহ্ন
সোজা ঢুকে যায় বাক্যের ভিতর
ভাষার সমস্ত অলংকার হয়ে ওঠে উজ্জ্বল;
তোমার চুল, কানের লতি
ঘাড় অথবা হৃষ্টপুষ্ট ঠোঁট।

এভাবে লিখতে লিখতে বাক্যের শেষে
পড়ে যায় দাড়ি। একবার একটি বাক্য শেষে
পরবর্তী বাক্যের জন্য অপেক্ষা করি।
আর এভাবে তোমার মধ্যেই খুঁজে পাই
বিরাম চিহ্নের নীতিমালা।

প্রণবকুমার চক্রবর্তী
এখন শুধু অপেক্ষা 

চোখের পাতা ঢাকা আছে
এক রঙিন ঘুমের আবেশ
আবেশের সেই অবকাশে
হালকা জ্যোছনার হলুদ রঙ গায়ে মেখে
হঠাৎই  হাত-পা নাড়িয়ে
গান শুরু করেছে
এক উন্মত্ত পাগল  কালবৈশাখী...

বুকের আগুনে 
পুড়ে যাওয়া ইচ্ছের ছাইগুলো
আচমকা জেগে ওঠা
কালবৈশাখী ঝড়ের স্বাদ পেয়ে নড়ে ওঠে
নাচতে নাচতে বেরিয়ে পড়ে 
বঞ্চনা এবং হতাশায় রাঙা রাজপথে 
নিজের অজান্তেই 
নিজের ইচ্ছের বিরুদ্ধে 

তবে এটা ঠিক 
ঝড় শেষে একদিন নিশ্চিত সূর্য উঠবেই ...

অনিন্দ্য দ্বীপ
মুখস্ত শ্লোক

ধরো, রাতই একমাত্র উর্বর জমি। 
আমরা বীজ বুনে যাচ্ছি স্বপ্নের- 
যেখানে গাঢ় সবুজ হয়ে ফুটছে প্রেম
আর মুগ্ধতার রূপকথায় তুমি রাজকন্যে 
আলোর মায়াবি ঘোর তোমাকে কুর্ণিশ করছে
তোমার স্তুতি বর্ণনায় স্বয়ং জিউস 
অথচ তুমি বৃক্ষের নীচে ঘুমিয়ে পড়েছো 
স্বপ্নের ভেতর একটা কাটাঘুড়ি
অস্তিত্বের এন্টিনারে ঝুলে আছে..,
তুমি তোমার অস্তিত্বের নামে চুমু খাও
বুকের খামে লিখে রাখো গোপন প্রেমপত্র-
ঘোড়ার খুড়ের শব্দে ঘুমভেঙে গেলে
রাজপুত্তের বুকে বসিয়ে দিও খঞ্জনী
প্রবাহিত রক্তে যদি লিখে তোমার নাম
তাকে জীবনের প্রতিশ্রুতি দিও
তাঁর নামেই পড়ো গোপন জিকির...

বঙ্কিম কুমার বর্মন
বিবাহবাসর

পিঁপড়েদের সারি সারি ইচ্ছেগুলো গুছিয়ে রাখি খাতার ভাঁজে। যতটুকু সম্ভব ঘুমের ভেতর চিরুনি তল্লাশি চালাই, যদিও পবিত্র জলের কাহিনীর ত্রাস ঢুকে পড়ে কাগজের ম্যাপে ও নদীর শরীরে। আর এভাবেই রোজ লবঙ্গ হয়ে যাওয়া চড়–ই পাখির কান্না থেকে খসে পড়ে সর্তক খাঁ খাঁ দুপুর । অনেক জয়ধ্বনি ছুঁড়ে ফেলে জলঢেউ ছুঁয়ে যায় ঈশ্বরের জিভে। দৈবাৎ ফোঁটা ফোঁটা আলোকবিন্দু পূর্ণতায় মিশে যায় গার্হস্থ্য অন্ধকারে। ঘনিষ্ঠ গোধূলির ঘামগন্ধ বারবার বুঝিয়ে দিচ্ছে মাটির উপপাদ্য সমীকরণ। তৃষিত মাঠ, ফসলের ঘ্রাণ বিবর্ণ হয়ে যায় চৌকাঠে, শুধু দায় থেকে যায় আমাদের ঘড়ির কাঁটার প্রতিটি পদক্ষেপে। স্বাক্ষরিত গ্রাম্য পুকুর সাজায় মাছরাঙার ফেলে আসা বাল্য জীবনের গল্পগাঁথা। যেভাবে দখিনা বাতাস, দুলে উঠলো কিশোরীর কানের দুলে মনে হয় রূপকথার দেশ,  আর আমরা বছরের পর বছর একটা অযোগ্য বিবাহবাসর।

ভাষান্তর: কায়েস সৈয়দ
মূল: হোর্হে লুইস বোর্হেস
গুনার থরগিলসন

সময়ের স্মৃতি
তরোয়াল ও জাহাজে পূর্ণ
আর সা¤্রাজ্যের ধূলিকণা
আর হেক্সামিটারের গুঞ্জন
আর যুদ্ধের সুউচ্চ ঘোড়াগুলো
আর চিৎকার ও শেক্সপীয়ার

আমি সেই চুমুটি মনে করতে চাই
আমাকে যেই চুমু দিতে তুমি আইসল্যান্ডে

গল্প
পাপ                                                                                  
আপন রহমান

নিঝুম রাত। হঠাৎ ঘুম ভেঙ্গে যায় মাসুম সাহেবের। সে অনুভব করে কোন একটা হাত তার ডান হাতটা ধরে আছে। হাতটা সাধারণ মানুষের হাতের মত নয় ভীষণ শীতল। গাঢ় অন্ধকারের মধ্যেও হাতটা সে স্পষ্ট দেখতে পায়। গাঢ় নীল হাতটা অন্ধকারে ডিনামইটের মত জ্বল-জ্বল করছে। শুধু একটা হাত সেখানে দেহের কোন অস্তিত্ব নেই। হঠাৎ হাতটা তাকে ধরে টানাটানি শুরু করে দিল। ভয়ে তার শরীর থেকে টপ-টপ করে ঘাম ঝরছে। কিন্তু কোন শব্দ তার মুখ থেকে বের হচ্ছে না। পাশে স্ত্রী রেহেনুমাকে ডাকবে সেটুকু শক্তিও তার শরীরে নেই। হাতটা তাকে ক্রমাগত টেনেই যাচ্ছে। না আর পারা যাচ্ছে না। হাতটা আগের থেকে আরো জোরে টানা শুরু করেছে। শরীরের সমস্ত শক্তি প্রয়োগ করে মাসুম সাহেব আর বসে থাকতে পারলো না। ছুটতে শুরু করল হাতের সঙ্গে। হাতটা আগে তাকে মাটি দিয়ে টানছিল। নেবুদার বাঁশ বাগান পেরিয়ে বটতলার শ্বশানঘাটের কাছাকাছি এসে হাতটা হঠাৎ তাকে নিয়ে উড়তে শুরু করল। এখন মাসুম সাহেবের বেশ ভালই লাগছে। বিনা পয়সায় প্রথম প্লেন চড়ার মত একটা আনন্দ কাজ করছে তার ভিতরে। আসলে মানুষ দীর্ঘক্ষণ একটা কঠিন ভয়ের মুখোমুখী হলে এক পর্যায়ে সেই কঠিন ভয়টা হয়ে যায় সাধারণ ব্যাপার। মাসুম সাহেবের ক্ষেত্রেও ঠিক একই ব্যাপার ঘটেছে। কিছুক্ষণ পর ঘটল এক মহা বিপত্তি। অনেক উপর থেকে হঠাৎ হাতটা মাসুম সাহেবকে ছেড়ে দিল। মাসুম বাঁচাও-বাঁচাও চিৎকার করতে-করতে শাঁ-শাঁ করে নিচে পড়ে যাচ্ছে। নিচে অন্ধকারাচ্ছন্ন ঘন বন। অত উপর থেকে এই মোটা শরীর নিয়ে নিচে পড়লে তার অবস্থা গাছ থেকে পড়া পাকা টস-টসে জামের মত হবে, আর বনের বাঘ, ভালুকেরা আজকের ভুরি- ভোজনটা তাকে দিয়েই সারবে। এ কথা ভেবে মাসুম সাহেবের চিৎকারের মাত্রা আরো বেড়ে গেল। সে গলা ছেড়ে দিয়ে চিৎকার করতে লাগলো বাঁচাও-বাঁচাও...। হঠাৎ রেহেনুমা বেগমের কর্কশ কণ্ঠ শুনে সজ্ঞা ফিরে পেল মাসুম সাহেব। ‘ধেড়ে ব্যাটা, সকাল নয়টা বাজে অফিসের সময় হয়ে যাচ্ছে, আর উনি শুয়ে-শুয়ে ছোট বাচ্চাদের মত বিছানায় গোঙাচ্ছে। বলি অফিসটা কি তোমার বাবার অফিস? যে নবাবের বাচ্চার মত বারোটার সময় গেলেও চলবে। তাড়াতাড়ি ফ্রেস হয়ে এসো নাস্তা রেডি।’ বৌয়ের বকুনি শুনে স্বপ্নের কথা বেমালুম ভুলে গেল মাসুম সাহেব। বৌটা তার স্বাক্ষাত যমদূত। বৌয়ের সামনে গেলে সে বেমালুম ভুলে যায় কে কর্তা আর কে গিন্নি সেখানে স্বপ্ন ! ডাইনিং রুম থেকে আবার চিৎকার ‘কইগো নবাবের ব্যাটা, এখনো বিছানা ছাড়নি? দশটা যে বাজতে গেল।’ মাসুম সাহেব এবার ধড়পড় করে উঠে বাথরুম মুখো ছুটতে শুরু করে।
বাথরুমে ঢুকেই আরেক বিপত্তি। ট্যাপের পানি ছেড়ে দিতেই আঁৎকে ওঠে মাসুম সাহেব। পানির রঙ ঠিক সেই হাতটার মত নীল। চিৎকার করে ওঠে মাসুম সাহেব। রেহেনুমা, রেহেনুমা। হঠাৎ একটা মেয়েলী কণ্ঠ ভেসে আসে মাসুম সাহেবের কানে-‘চিৎকার করবেন না মাসুম সাহেব। আপনার চিৎকার কেউ শুনতে পারবে না। আমরা আপনার সমস্ত শরীরের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করেছি। এখন থেকে বিশেষ বিশেষ সময়ে আমরা আপনার সঙ্গে যোগাযোগ করবো। তবে ভয় পাবেন না। আমাদের কথা মত চললে আপনার কোন ক্ষতি হবে না।’ ভয়ে থর-থর করে কাপছে মাসুম সাহেব তারপরও বুকে সাহস নিয়ে জিজ্ঞাসা করল “আপানারা কারা?” গভীর একটা কণ্ঠে উত্তর এলো, ‘তোমার অতীত।’ শরীরের মধ্যে কেমন একটা ঝাঁকুনি অনুভব করলো মাসুম সাহেব। কারেণ্ট শক করলে যেমনটা হয়। শরীরের দিকে তাকিয়ে দেখল তার সমস্ত শরীর ফ্রেস। দাঁত ব্রাশ, গোসল সবই হয়ে গেছে এরই মধ্যে বিশ্ময় ভরা চোখ নিয়ে বাথরুম থেকে যখন বের হল।
রেহেনুমা বেগম হাসিমাখা মিষ্টি কণ্ঠে তাকে বলল, ‘কি গো তুমি কি রোবট হয়ে গেলে? মাত্র তিন মিনিটে গোসল শেষ!’ কি ঘটেছে কিছুই বুঝতে পারছে না সে। বাসর ঘরেও যে স্ত্রী তার সঙ্গে কর্কশ কণ্ঠে কথা বলেছে আর বিয়ের পর ১৫টি বছর ১মিনিটের জন্যও যে মানুষটি তার সঙ্গে হেসে কথা বলিনি। সেই মানুষটি আজ এত মধুর সুরে কথা বলছে। ভাবতে-ভাবতে রেডি হয়ে ডাইনিং গিয়ে বসল। মিষ্টি সুরে স্ত্রী বলল, ‘জানো আজ তোমার পছন্দের সব আইটেমই রান্না করেছি। তুমি আজ পেট ভরে খাবে। আর আমি বসে বসে প্রাণ ভরে তোমায় দেখবো। তারপর খাওয়া শেষে আমরা ঢাকা শহরের সব জায়গা গুলোতে ঘুরতে যাবো। আশার পথে ডাঃ সাবরিনা আক্তারের সঙ্গে একটু দেখা করে আসবো। উনি এখন ঢাকার খুবই নাম করা গাইনি বিশেষজ্ঞ। পনেরটি বছর কাটলো তবুও এখনও পর্যন্ত আমরা কোন সন্তানের দেখা পেলাম না। সে বিষয়ে তুমি কি কখনো ভাবো? সারা দিন শুধু অফিস আর অফিস টাকা আর টাকা। কি হবে এসব দিয়ে? কে খাবে এসব! বস’কে ফোন করে বলে দাও আজ অফিসে যাচ্ছো না।’  দিনটা ভালোই কাটলো মাসুম সাহেবের সারা দিন আজ বৌয়ের হাত ধরে পার্কে রেস্তোরায় কত জায়গায় ঘুরেছে কত মজা করেছে। বউ আজ তার সঙ্গে রাগ তো দুরে থাক অভিমানও করেনি। সন্ধ্যায় বেলকনিতে বসে সিগারেট খেতে-খেতে সারাদিনের মধু মাখা স্মৃতি গুলোই ভাবছে মাসুম সাহেব। আর রেহেনুমা বেগম রান্নার কাজে ব্যস্ত। মাঝে-মাঝে কাজের মেয়েটার সঙ্গে অহেতুক চেঁচামেচি করছে। সেটা তার কান স্পষ্ট ভেসে আসছে। কিন্তু মাসুম সাহেব বুঝতে পারছে না, হঠাৎ তার সঙ্গে এমন মধুর আচরণের হেতু। হঠাৎ হো-হো হাসির শব্দ, ‘চিন্তায় পড়ে গেছো মাসুম সাহেব? ভাবছো কয়লা থেকে ময়লা কিভাবে দুর হয়েছে? আমরাই করেছি। আমরা এতদিন তোমার বউয়ের আত্মার মধ্যে বসবাস করছিলাম এখন সেখান থেকে বের হয়ে প্রবেশ করেছি তোমার মধ্যে হা, হা...। মাসুম সাহেব তোঁতলাতে তোঁতলাতে প্রশ্ন করলো তোমরা কারা? আমরা? হা-হা-হা আমরা তোমার সন্তান।” সন্তান! কিন্তু আমার তো কোন সন্তান নেই! সন্তান নেই। হা-হা-হা মনে করে দেখ মাসুম সাহেব। সেই প্রথম জীবনের কথা। মনে পড়ে তোমাদের সেই কাজের মেয়ে মেরিনার কথা ? তার সঙ্গে তোমার অনৈতিক সম্পর্কের কথা। যে অনৈতিক সম্পর্কের ফসল ছিলাম আমরা। সেদিন তুমি তোমার পাপ ঢাকার জন্য হত্যা করেছিলে আমাদের ! একবার নয়, দুইবার নয়, কয়েক বার অঙ্কুরে বিনষ্ট করেছিল আমাদেরকে আর সেই পাপের ফল আজ ভোগ করছো তুমি। মাসুম সাহেব কাঁদো-কাঁদো স্বরে বলল এখন দয়া করে তোমরা বলো- কি করলে আমার এ পাপের প্রায়শ্চিত্ত হবে? কোন প্রতি উত্তর এলো না তার কানে।
বসে ভাবতে লাগলেন মাসুম সাহেব। কি ঘটছে এসব। আর কেনই বা ঘটছে। কেনই বা তার এত সুন্দর পৃথিবীটা এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে। বেশ ভালোভাবেই তো কাটছিল তার সংসার জীবন। অভাব কী জিনিস সাংসারিক জীবনে সে কিংবা তার স্ত্রীকেও অনুভব করেনি। অবশ্য সমাজে কিছু কিছু অভাবহীন মানুষেরা বেশী অভাবী। যেমন মাসুম সাহেব। অর্থনৈতিক কোন অভাব না থাকলেও স্ত্রীর ভালবাসা এবং সন্তানের অভাব মাসুম সাহেব সব সময় বোধ করেন। রাতে মাসুম সাহেব তার স্ত্রীকে এতো দিন ধরে ঘটে যাওয়া সব ঘটনা খুলে বলল। রেহেনুমা আজ আর কোন রাগ করল না। কেন যেন স্থির রইল। 
সকালে রেহেনুমা তাকে নিয়ে গেল তার এক পরিচিত মনোরোগ বিশেষজ্ঞ সাইফুল সাহেবের কাছে। কোন কিছুই গোপন না করে তিনি একে-একে সব ঘটনা খুলে বললেন। সাইফুল সাহেব বললেন- ‘দেখুন মাসুম সাহেব, আপনি যে ঘটনার কথা বলছেন, এগুলোর কিছুই ঘটেনি আপনার জীবনে।’ ‘ঘটেনি?’ অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করলেন মাসুম সাহেব। সাইফুল সাহেব বললেন- ‘না ঘটেনি।’ ‘তাহলে কি আমি দুুুুঃস্বপ্ন দেখেছি ?’ ‘না দুুুুঃস্বপ্ন নয়, তবে ঐ রকম কিছু। আসলে আপনার ভিতরে সন্তানের অভাব বোধটা ভীষণভাবে কাজ করে। সেই সঙ্গে আপনার অতীত জীবনের পাপবোধ। এই দুইটা বিষয় নিয়ে আপনি ভাবতে ভাবতে ধীরে ধীরে মানসিক বিকারগ্রস্থ হয়ে পড়েছেন। এ থেকে মুক্তির একমাত্র পথ; যদিও সম্ভব কিনা আমি জানিনা। পূর্বের পাপের প্রায়শ্চিত্তটা কোন ভাবে যদি করা যায়, তাহলেই হয়তো...।’
সাইফুল সাহেবের চেম্বার থেকে বেরিয়ে স্ত্রীকে নিয়ে সোজা বাড়ি চলে গেলেন মাসুম সাহেব। স্ত্রীকে বাড়ির সামনে নামিয়ে দিয়ে বললেন তুমি যাও আমি আসছি। স্ত্রী জিজ্ঞাসা করলেন- ‘কোথায় যাচ্ছো তুমি?’ উত্তরে মাসুম সাহেব বললেন- ‘মেরিনার খোঁজে...।’

পুনর্পাঠ
কেন লিখি

আঁদ্রে জিদ বলেছিলেন, ‘লিখি কারণ না লিখলে হাত ব্যাথা করে।’

গার্সিয়া মার্কেজ বলেছিলেন, ‘লিখি যাতে আমার বন্ধুরা আমাকে আরো একটু বেশী ভালোবাসে।’

হেমিংওয়ে বলেছিলেন, ‘যে কারণে বাঘ হরিন শিকার করে সেকারণে আমি লিখি।’

মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছিলেন, ‘লেখা ছাড়া অন্য কোন উপায়ে যে সব কথা জানানো যায় না সেই কথাগুলি জানাবার জন্য লিখি।’

জীবনানন্দ দাস এ প্রশ্নের উত্তর দিতে চেয়ে নিবন্ধে লিখেছিলেন, ‘আমার এবং যাদের আমি জীবনের পরিজন মনে করি তাদের অস্বস্থি বিলোপ করে দিতে না পেরে জ্ঞানময় করার প্রয়াস পাই এই কথাটি প্রচার করে যে জীবন নিয়েই কবিতা।’

No comments:

Post a Comment

সর্বশেষ

শিল্প সাহিত্য ১৩৩

সোমবার   ৯ই ভাদ্র ১৪২৭ , ২৪ই আগষ্ট ২০২০   কবিতা বিনয় কর্মকার ছবির গল্প   ভাতের ছবি আঁকতেই, ছিটকে পড়ে কালির দোয়াত! লালরঙা স্রোত, সাঁতারকাট...

সর্বাধিক