Friday, September 11, 2020

শিল্প সাহিত্য ১৩৩

সোমবার  ৯ই ভাদ্র ১৪২৭, ২৪ই আগষ্ট ২০২০ 



কবিতা

বিনয় কর্মকার

ছবির গল্প  


ভাতের ছবি আঁকতেই, ছিটকে পড়ে কালির দোয়াত!

লালরঙা স্রোত, সাঁতারকাটে ইয়েমেনের শিশু।

থালাগুলো চাঁদ হয়;

আমরা বামন আর চাঁদের দূরত্ব জানি।

ক্যানভাসজুড়ে সেমিনার- ‘যুদ্ধ এবং শান্তি’

টুপি কিনে কেউ-কেউ হাজী হয়ে ওঠে; কেউ আবার- চে !

ক্যাপশনে লিখে দিই- ‘শান্তির শ্বেতপায়রা’

যদিও পৃথিবীতে ছবি আঁকা হারাম!!


এম, এম বাহাউদ্দীন

পাথর চাঁপা বুক


আমার পাথর চাঁপা বুকটা আলগা করে দেখি-

রং বদলে গেছে সাদা ঘাসের মত।

আরও কিছু কাল নিজেকে এভাবেই রাখবো এখানে,

তুমি ফিরে আসবে বলে কথা দিয়ে চলে গেলে-

আমাকে কাগজ ভেবে বুকে পাথর চাঁপা দিয়ে গেলে-

যাতে উড়ে না যাই আমি হাওয়ার হাত ধরে।

ফিরে না আসো ক্ষতি নেই,

দেখে তো যাও, আমি আজও আছি সেইখানে পড়ে।


কত ধুলো বালি, জল কাদা লেগে নিজের অবয়ব-

জীর্ণ করে পড়ে আছি এই ভেবে- তুমি সত্যিই আসবে।

অথচ হাওয়ারা কান কথা বলে যায়, হারিয়ে গেছো।

বৃষ্টিরা কাঁদে আমায় রৌদ্রে পুড়তে দেখে।

আমি হাসি, মলিন ভাবে হাসলেও হাসি।

তুমি তো আমার হাসি দেখেই বলেছিলে 'ভালোবাসি'।


তুমি এ পথে আর আজ কাল আসোনা।

আমার চোখে কতকাল পড়েনি তোমার চোখ,

তোমার ছায়ায় কতকাল বিশ্রাম পাইনি ক্লান্ত আমি!

তবু রাতের প্রতিক্ষা যেমন দিনের আসায়,

তেমনি আমিও প্রহর গুনি বুকে পাথর নিয়ে।

কবে আমার যন্ত্রণা কারত প্রতিক্ষার প্রহর শেষ হবে?

বজ্রপাতে পুড়ে গেলে? না কি বন্যার বানে ভেসে গেলে?


https://play.google.com/store/apps/details?id=com.spintocard.morescratches


কমল কুজুর

তুমি-আমি ও যাপিত জীবন


একে একে কেটে যায় ব্যস্ততম দিন

ধরণীর পরে পড়ে থাকে নিরর্থক রাত 

ডোবে সূর্য, ওঠে চাঁদ নিত্যদিন; আমার ঘরের আঁধার 

তবুও হয় না দূর! 


বিপন্ন আত্মার চাপা ক্রন্দনধ্বনি 

গুমরে গুমরে মরে গৃহের কোণে কোণে।


নিশিথের স্বপ্নবিলাসী মন দেখা পায় ক্ষণিকে

ভাঙে আকাশ, ফুঁসে ওঠে সমুদ্র, তানপুরার ঝংকারে

রংধনুর রং করে মূর্ত মুহূর্তে...


আর এই সংযুক্ত সংঘর্ষ

মায়াবী ধুম্রজাল সৃষ্টি করে ক্ষণিকে

হৃদয়ে আমার গ্রীষ্মের তীব্র দাবদাহ শেষে

এক পশলা বৃষ্টির ছোঁয়া যেন;

হাড়কাঁপানো শৈতপ্রবাহ নিয়ে- শীতের অতিথি 

পাখির সমারোহে উত্তার ধরনী।

হৃদয় আজ সৃজনী স্বপ্নযাত্রার রঙে রাঙানো

রিমঝিম বৃষ্টির ছন্দে সাজানো,

উর্ধ্বে ওড়ে মুক্ত বিহঙ্গ যেন!


https://play.google.com/store/apps/details?id=com.dailycash.freecash.freemoney.earnmoney


আনিকা তামান্না

আমি কচুরিপানা আর আপনি জল


কচুরিপানার মত ভেসে কেবল,

যুগ যুগ ধরে একটা ঠিকানা নেই বলে,

আপনি তো গেলেন সেই কবে; ফেরার নাম নেই-

জানেন কিছু!

কখনো গ্রীষ্মের উত্তাপ সহ্য করেছি 

কখনো বা বর্ষার বৃষ্টিও গায়ে মেখেছি

কখনো কখনো ফাল্গুনের বাতাসের সাথে দোল খেলে খেলে

অন্য কোথাও পাড়ি জমিয়েছি ভাসতে ভাসতে

কাটছিলো বেশ; আচ্ছা এটাই কি নিয়ম?

আমি তো কচুরিপানা হয়ে ভেসেই রইলাম, ঠাঁই হলো না কোথাও; অথচÑ

এক সময় খুব চাইতাম আমি কচুরিপানা হয়ে ভেসে থাকব

আর আপনি জল হবেন!

আমাকে আশ্রয় দিবেন সারাজীবন আপনার স্রোতে।

তারপর একদিন আপনি ফিরে এলেন 

তখন ছিল প্রচন্ড খরার মৌসম


কেউ জল হয়ে আমাকে ভাসিয়ে রাখতে পারেনি


https://website.cc.lerjin.com/i/8368320814


অপার অরণ্য

নিঃসঙ্গ শোক আমার মা


রাত-দিন-দুপুর একা এবং অন্ধকার।

জঠরে লাথি মেরে জ্যোৎস্নার গল্প শুনতে চাইলে

মা আমাকে নদীগামী পুরুষের কথা বলেন-

মা’র স্বপ্নে এক যুবকের ঠোঁট বেয়ে নেমে আসত জুঁই

মা’র নিদ্রায় কে তুলে হুংকার, -আগুন -আগুন..

ভয় পাওয়ার ভয়ে মা আগুনই জাপটে ধরলেন তাই

সেই থেকে আর গল্প শুনতে চাইনি কোনদিন।

গহীনে গোপনে একমাত্র আমিই জেনেছি

গর্ভফুল থেকেই মা আমার তুমুল সঙ্গহীন।


হামাগুরি, হাঁটতে-চলতে কাক চিলের উড়ান

নুনের ভাত কি ঘাসের রোদে কখন চুমুক দিতে হয়

মা একদিন শিখিয়ে দিলেন।

বললেন- পেটের সঙ্গে পিঠের দূরসম্পর্ক নাই

শিখালেন চোখের মধ্যে পুকুর পুষে আগুন গেলার

সম্ভাব্য কৌশল।

আরও আরও কত কি শিখালেন ইয়ত্তা নাই

ক্রমাগত সাপ-নেউলে দেখেছি বাবার সঙ্গে মা’র

এখন বোধ পেরিয়ে লিখতে পারি কানামাছি দৌঁড়


মা’র বড় ছেলে শিস টেনে টেনে হঠাৎ একদিন

ভূত-দুপুরে জলের তলায় বাঁশি হয়ে যায়

মা'র থেঁতলানো বুক ছাপে হারানো অশ্রুলিপি

মা’র শূন্য উঠানে কেউ আর হাঁটে না

মা’র চিকন সিঁথি ধরে একটা বউ-কথা-কও ডেকে

যায়, একাএকা- নিশিভোর।

সংসারবাড়ী ধুয়েমুছে আকাশদেশে মূর্ছা যেতে চাইলে

মাকে জড়িয়ে ফুটফুটে জমজ গোলাপ দিলেন বাবা


অনেকবছর পর, গল্পানুসারে একটি মোরগ সহোদর

হয়ে উঠলে মা’র নিঃসঙ্গতা ঘোঁচে

বাসনকোসন মাজার ফাঁকে মা তাকে খেতে দেয়

কোলে নিয়ে পুত্রস্নেহে চুমো খায়

কেউ না জানে চুপেচাপে কতকথা হয়ে যেত গান

মা’র কলতলা ভরে যায় শৈথিল্যের সুরকাকলি

অথচ গলায় ক্যাকটাস নিয়ে মোরগটি গতকাল লাল

মরে যায় মা’র তৃষ্ণার্ত গান

মুখে মুখপোড়া বিষাদ, চোখে চুপকথার জাগ

পুত্রশোক পেঁচিয়ে রাখে মা'র দৈনন্দিন শীত


কি নিয়ে দাঁড়াই, কি দিয়ে বলি এনেছি মাদুলি

বুকের ভিতর বাইন্ধা রাখো তামাম মায়া-স্বপন

মা’র কথা উঠলেই আমি বাবাকে আড়াল করতে চাই

অথচ বাবা এসে জড়ালেই মা’র শোক ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়!

http://qten.testla.io/page/get        রেফার কোড 'EFI7CD0N'

ধারাবাহিক গল্প

ব্লকলিস্ট

রওশন রুবী


দুই

আমি বলি,

-লেখা নিয়ে যা বলেন, তা আমি মানবো না। সেখানে আমার যুক্তি আছে। ধরুন আপনি বা আমি একজন সাহিত্যকর্মী। আমরা জীবনজ্যামে প্রতিনিয়ত জড়িয়ে সপ্তাহ বা পনেরো দিনে বা মাসে একটি সাহিত্য আসরে বসা মুশকিল হয়। কিন্তু এই ফেসবুকে দেখুন, আমরা প্রতিদিন সারাবিশ্বের বেশ কিছু মানুষের সাথে সাহিত্য আড্ডা সেরে ফেলতে পারছি। আমরা যেমন কিছু শিখছি, জানছি। তেমনি অনেক কবি, লেখক উৎসাহিত হচ্ছেন। দিনে, দিনে তাদের লেখা পাল্টে নেবার চেষ্টা করছেন। এই প্রাপ্তিটা আমার কাছে বিশাল লাগে। আর গ্রুপ এবং পুরষ্কার। এ দুটো নিয়ে আমারও আপত্তি আছে।


গ্রুপ করার থেকেও মারাত্মক কিছু মানুষ আছে। যারা কি পোস্ট করে, কেন করে তাই বুঝে না। যেমন- কখন খেল, কখন শুলো, কখন মুতলো আর কখন কাশি দিল, বাসর রাতে কী গল্প করবে সে বিষয়েও পরামর্শ চেয়ে পোস্ট। এমন কি ডায়রিয়া আক্রন্ত হলে সে খবরটিও পোস্ট করে দিতে দ্বিধা করছে না। ফাজিল একেকটা। ওদের আইডিতে রাখতেও রুচিতে বাঁধে। এদের মধ্যে আবার কিছু আবাল বিবেক শূন্য। অসহ্য লাগে তাদের। যেমন- বাবা, মা, স্ত্রী, পুত্র, কন্যা, ভাই বোন বা কোন রিলেটিভ মারা গেলেই সেই মুহ‚র্তে তারা শোক না করে ফেসবুকে একটা পোষ্ট দিয়ে দেয় মৃত্যু জনিত। বিস্ময় লাগে এমন শোকের সময় পোস্টানোর মতো মানসিকতা আসে কি করে? তারা কি তবে স্বজন বা মা, বাবা, স্ত্রী, পুত্র, কন্যা, ভাই বোনের চেয়ে ফেসবুক বন্ধুদের আপন ভাবে বা বড় ভাবে? যাদের সে প্রতিমুহূর্তের শোক দুঃখ আনন্দ দৈনন্দিনের খবরা খবর না দিয়ে থাকতে পারে না?


এই যেমন এখন একজনের পোস্ট দেখে বেদনার্ত হলাম। তার মা মারা গিয়েছেন। তিনি অকাতরে কাতর হয়ে ফেসবুক জুড়ে পড়ে রইলেন। লিখলেন-


আসসালামু আলাইকুম


ইন্না লিল্লাাহি ওয়া ইন্না ইলাহী রাজিউন। দুঃখের সাথে জানাচ্ছি আমার প্রিয় মা গতরাতে শান্তিতে আলহামদুলিল্লাহ ইন্তেকাল করেছেন। তিনি একজন ধার্মিক, যত্নশীল এবং প্রেমময় মহিলা ছিলেন। তিনি মারা যাওয়ার আগে সবার কাছে ক্ষমা চেয়ে ছিলেন। দোয়া করুন যেন আল্লাহ তায়াালা তার প্রতি করুণা করেন এবং তাকে ক্ষমা করেন এবং জান্নাতুল ফেরদৌসে তাকে সর্বোচ্চ পদ দান করেন। আমীন।


তার জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে: উত্তর পশ্চিম কোটপাড়া, মুসলিম সমিতি, ঢাকা। কোতোয়ালী মসজিদ মোহাম্মদপুর, ঢাকা। যোহর সালাতের পরে ২:০০, শনিবার ১১ জানুয়ারি ২০২০। জানাজার পরে দাফন করা হবে আজিমপুর গোরস্থানে। 


দাফন শেষে আমার পরিবারে সাথে মসজিদে ফিরে খাবার গ্রহণ করবেন। আমি আপনাদেরকে আন্তরিকভাবে আমাদের সাথে যোগ দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।


জাজাক আল্লাহ ।


পরিশেষে 

সিলিতা হক।


কিযে অদ্ভুত এই মানুষটা। এমন মানসিকতার বহু মানুষই আছেন। আমি একটি উদহারণই দিলাম।


ভাবতে ভাবতে স্টপেজে গাড়ি এসে থামল। নেমে হাঁটতে শুরু করলাম। মানুষ বিচিত্র রকম। কখনো কখনো হয়ত জ্ঞনশূন্য হয়ে পড়ে। (চলবে...)


https://l.facebook.com/l.php?u=https%3A%2F%2Fplay.google.com%2Fstore%2Fapps%2Fdetails%3Fid%3Dcom.spintocard.morescratches%26fbclid%3DIwAR2vET6Db0Mxl6y2K-y46ARlm0ayocrxdm50PWpaRih_E-aXOxqKmWxoRTg&h=AT1OpmoGlMHptY4KmisBfiZQs7r-70vZ6fs2YCeLNzdQ2axQaausZFkEeCigFnehxPutGKlLAoJvgyGBPdw-ebRcfEfUzIV1ypmet6idTPR_likPURRBUZIULyHv3SHl4Jg

No comments:

Post a Comment

সর্বশেষ

শিল্প সাহিত্য ১৩৩

সোমবার   ৯ই ভাদ্র ১৪২৭ , ২৪ই আগষ্ট ২০২০   কবিতা বিনয় কর্মকার ছবির গল্প   ভাতের ছবি আঁকতেই, ছিটকে পড়ে কালির দোয়াত! লালরঙা স্রোত, সাঁতারকাট...

সর্বাধিক