কায়েস সৈয়দ
জলজ
নুন আর নুনুর সাদৃশ্য খুঁজে
আগন্তুক এক জলজ
সমুদ্রের গহীন থেকে উঠে এসে ডানায়
ভাবে
দুটোর সংস্পর্শ ই তার সৃষ্টির কারণ
নুন আর নুনুর সাদৃশ্য খুঁজে
আগন্তুক এক জলজ
সমুদ্রের গহীন থেকে উঠে এসে ডানায়
ভাবে
দুটোর সংস্পর্শ ই তার সৃষ্টির কারণ
***************
কহর
বৃষ্টি
ধানক্ষেত
দুপাশে অরণ্য
পিচঢালা পথে ছড়ানো ছাতার সৌন্দর্য
এ’পথ ধরে স্বর্গে যাওয়া যেতো,
যেখানে যাচ্ছি সেটা স্বর্গ নয়, শহর!
লকডাউন
নর্দমা করেছি নদী
উজার করেছি বন
উল্লাস করে পাখি খেয়ে
খাঁচায় ভরেছি আত্মহত্যার নিশ্চিন্ত দুপুর
------------------------------
থমকে থাকা সময়
--------------------------
দেখো-
দ্বীপের নাভিমূলে
গোলাপ হয়ে ফোটে কাঁকড়ার দল
সমুদ্রের স্তনজুড়ে
পান করে ডলফিন হীমশীতল জল
কাছিমেরা ফিরে এসে ডানায়-ছড়িয়ে দিচ্ছে
শুভ্র থোকা থোকা ওম
দোল খায় কানে সাগরলতা
অপেক্ষা করো-----------পৃথিবী সাজছে
-----------------------------নতুন করে বাঁচার
দুঃস্বপ্ন
১
কারো কারো চোখে রাত্তিরে বাসা বাঁধে মেঘ। যে আঁধারে জ্বলে জোনাকি সে আঁধার হয়ে যায় চোখের কাজল। আমাদের পাঁচ ভাইবোনকে একটু একটু করে আলো বিলাতে বিলাতে মা হয়ে যান আলোকশূন্য। উলিরা দখল করতে চায় চোখের কোটর। মা তবু মেঘকে বানান স্বপ্ন। একটা আশ্রয়স্থল সামনে সবজি বাগান। এই স্বপ্ন দেখতে দেখতেই বড় হয়ে যাই আমরা। স্বপ্নও সাথে সাথে বড়ো হয় মার। একটা দোচালা ঘর, সামনে গেট, ফলের বাগান। আমাদের সন্তানরাও বড় হতে থাকে। সমান্তরালে ছোট হয়ে যায় মায়ের স্বপ্নের দৈর্ঘ্য!
২
ঘুমের মধ্যে আপনি হাঁটছেন। ফুটপাতের সমতলে হাঁটতে হাঁটতেই হঠাৎ পেছন থেকে বাসের কষিয়ে ধাক্কা। আপনার খুলি বাসের চাকায় কটমট করে ভেঙে গেলো। রক্তাক্ত মগজ থেৎলিয়ে ছিটকে পরলো পাশের সরকারি দেয়ালে। অযথা দেয়ালটা নষ্ট হলো। আপনার ঘুম ভাঙলো না।
আপনার ঘুম যেহেতু ভাঙলো না সেহেতু আপনি বেঁচে আছেন। আপনি আবার উঠে দাঁড়িয়ে হাঁটতে শুরু করলেন। জামা-জুতা কিনতে গেলেন মার্কেটে আর চাল-মাছ কিনতে ফুটপাতে। কোনো ফরমালিটি ছাড়াই দোকানী আপনাকে দিলো ফরমালিন উপহার। আপনি আয়েস করে খেতে থাকলেন। এভাবে খেতে খেতে হঠাৎ একদিন পেটের ব্যাথায় ধাক্কা খেলেন হাসপাতালের সঙ্গে। ডাক্তার মারফত জানতে পারলেন আপনার দুটো কিডনিই ড্যামেজ। আপনার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়লো। আপনার ঘুম ভাঙলো না।
যেহেতু আপনার ঘুম ভাঙলো না সেহেতু আপনি এখনোও বেঁচে আছেন। আবার উঠে দাঁড়ালেন। হাঁটতে শুরু করলেন এবার সাবধানে। নাক কান চোখ মুখ খোলা রেখে। নাক কান চোখ মুখ খোলা রেখেও আপনি আবার ধাক্কা খেলেন। জ্ঞান ফিরলে দেখলেন হাসপাতালের নিবির পর্যবেক্ষণ কক্ষে আপনি। ডাক্তারের পুরো শরীর সাদা এপ্রোনে আবৃত। ডাক্তার আতঙকের চোখে আপনাকে জানালো আপনি মারাত্মক ভাইরাসজনিত রোগে আক্রান্ত। এবার আপনি খুব শান্ত থাকলেন কেননা আপনি আগে থেকেই জানতেন এ রোগের কোনো চিকিৎসা নেই। যেহেতু কোনো চিকিৎসা নেই তাই একমুহূর্তের জন্যও আপনি আর হাসপাতালে রইলেন না। একদীর্ঘ লাফে চলে গেলেন বাসায়। বাসায় গিয়ে বসতে না বসতেই টিভিতে জানতে পারলেন আপনার ভাইরাসজনিত রোগটির এন্টিভাইরাস আবিষ্কারের তথ্য। সমস্ত টাকাপয়সা নিয়ে একমুহূর্তও দেরি না করে চলে গেলেন আবার হাসপাতালে। হাসপাতালে গিয়ে দেখতে পেলেন পুঁজিবাদের দুইভাগ করা পশ্চাৎদেশ। আপনার সামর্থ্যের কাছে সমস্ত আশা উবে গেলো। ধীরে ধীরে নিথর হয়ে গেলো আপনার শরীর। মুচকি হাসি দিলেন। এবার সত্যিই আপনার ঘুম ভাঙলো।
৩
শেষ আশ্রয়স্থল ভেবে আঁকড়ে ধরেছি যে স্থল পুঁজির জাতাকল তাকে বানিয়ে ফেলে পরিকল্পিত প্লট। প্লটগুলো উচ্চতায় বড় হয়। বড় হতে হতে সুউচ্চ ইমারত। আমাদের কান্না স্পর্শ করে সুবর্ণরেখা।
৪
অ্যালেন গিন্সবার্গ এর প্রতি
একটা বাস্তবিক ওয়াশিং মেশিন দরকার। নদীগুলো করতাম বিধৌত, খালগুলো পরিচ্ছন্ন, নালাগুলো পরিশুদ্ধ। পৃথিবীর বুকে শিরা-উপশিরা হয়ে বয়ে যেতো বিশুদ্ধ জলরক্ত। সড়কগুলো ধুয়ে ঝেঁটে দিতাম অবাঞ্চিত সব ধূলো। ধুয়ে ফেলতাম নিজেকে, ভেতরের সব অমানবিক সত্ত¡াকে। ধুয়ে ফেলতাম ইরাক, আমেরিকার সব সৈন্যকে। ধুয়ে ফেলতাম আমেরিকা, ভারত, চীন, রাশিয়া, পৃথিবীর দখলদারিত্ব ও খবরদারির মানসিকতা। ধুয়ে দিতাম আকাশ, ড্রাইওয়াশ করে উড়িয়ে দিতাম সব এসিড-জল। ড্রাইওয়াশ করতাম জাতিসংঘ নোবেল কমিটি ও অন্যান্য। ড্রাইওয়াশ করতাম গণতন্ত্র স্বাধীনতা শান্তি আরও অনেক শব্দ। ধুয়ে নিতাম সমাজতন্ত্র, মৌলভী লোকটাকে ধর্ম ছেড়েই আসতে হবে কট্টর এই অন্ধত্ব।
No comments:
Post a Comment