শিল্প সাহিত্য ১১২
ম্যাসেঞ্জারে প্রথম আলাপ।তারপর কয়েকটি ভালো ভালো কথা বলে প্রেম নিবেদন ধীরে ধীরে বিশ্বাস অর্জন করা।তারপরেই আচমকা একদিন গোপন ছবি চেয়ে বসা।প্রথমে অমত থাকলেও অভিনয়ের কাছে হার স্বীকার। ফোটো পাঠাল।ধীরে ধীরে আরো গোপন ফোটো গেল । সেও বিশ্বাস অর্জনের জন্য নিজের কিছু ফোটো পাঠিয়েছিল। ধীরে ধীরে মেয়েটি দেখল তার পাঠানো গোপন ফোটোগুলো সবার হাতে হাতে। সোস্যাল মিডিয়াতে ছয়লাপ। সদ্য প্রস্ফুটিত ফুল হঠাৎ কে যেন ছিঁড়ে নিল। পরিবার, সমাজ চোখ লাল করে বিছিন্নতার তোড়জোড় শুরু করে দিল। প্রশাসন পরিবারের নালিশ পেয়ে তদন্ত করার আশ্বাস দিল। কিছুদিন বাদে মেয়েটির সিলিং ফ্যানে ঝুলন্ত দেহ পাওয়া গেল তার ঘর থেকে। সহানুভূতি কিম্বা সমালোচনার ঝড় উঠল। ঝড় থেমে গেল। জীবন এগিয়ে চলল। তারপর আরো একটি মেয়ে ম্যাসেজ পেল তার মোবাইলে- " যদি ভালবাসো তাহলে যেটা আমি দেখতে চাই এক্ষুণি পাঠাও।”
শিল্প সাহিত্য ১১০
আলুর বস্তা কাঁধ থেকে নামিয়ে রেখে খুব জোরে হাঁচে বিশু । শরীরটা বেশ কিছুদিন ভাল নেই। গায়ে জ্বর।
বাদলের পাশে বসে সে বিড়ি ধরায়। আজ শ্রাবণ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ। গত দু’মাস কামাই বন্ধ। তার বউ শিবানী চার বাড়িতে ঠিকে ঝিয়ের কাজ করে। তারাও কাছে আসতে বারণ করেছে। প্রথম দু’মাস ঠিক মতন মাইনেপত্তর দিয়েছিল। গত মাস থেকে তাও বন্ধ।
বাদল সকাল সকাল আলু, পিঁয়াজ, আদা, রসুন নিয়ে বসে পড়েছে। খদ্দেরের অভাব নেই। কেউ তেমন দরদামও করছে না।
বিড়ির শেষ টানটা জোরে দিয়ে বিশু মিনমিনে স্বরে বলল, বাদল আমার পাওনাটা দিয়ে দে। বাড়ি ফিরে যাব। শরীরটা ভালো ঠেকছে না। সামনের বস্তা তুলে কুড়ি টাকা বের করে বাদল বিশুর দিকে বাড়িয়ে দিল।
এ
কিরে? পঞ্চাশ ছাড়। সকাল থেকে দশ বস্তা আলু বয়ে আনলাম। তোর আক্কেল কি রকম?
ঝাঁঝিয়ে উঠে বাদল, যা পেলি তাই নিয়ে কেটে পড়। মেলা ফ্যাচ ফ্যাচ করিস না। লক ডাউন চলছে। দেখছিস তো খদ্দের নেই।
বাজার
থেকে চলে আসে বিশু। গায়ে জ্বরটা আবার বেড়েছে। ধীর পায়ে বাড়ির সামনে এসে দেখে
পুলিশের গাড়ি, পাশে অ্যাম্বুলেন্স । তাকে দেখেই পাড়ার ছেলেরা পুলিশ অফিসারকে বলে,
স্যার, এসে গেছে। ধরুন স্যার। ওর বেশ কিছু দিন জ্বর। খুক খুক কাশি, সর্দি। নির্ঘাৎ
করোনা স্যার। বিশু করোনা হাসপাতালে দু’দিন পর মারা যায়। তাকে শেষবারের জন্য
দেখতেও পায় না শিবানী।
শিল্প সাহিত্য ১০৯
কুমুদিনী ছাদে তাঁহার মেঘসদৃশ কেশদাম শুকাইতেছিলেন, তিনি প্রত্যহ দুপুর দুইটা হইতে চার ঘটিকা ছাদে ঘুরিয়া ঘুরিয়া গান করিতে করিতে তাঁহার চুল শুকান। কুমুদিনী ঊনত্রিশ বৎসর বয়স্কা বাল্যবিধবা, বাল্যে ছয় বৎসর বয়সে কুলীন প্রথায় বিবাহ নয় বৎসরে বৈধব্য যোগ, কুমুদ স্বামীকে চিনিত না, মরিলে বিন্দুমাত্র দুঃখিত হয় নাই, পিতৃদেবের স্বচ্ছল অবস্থা তাই তাহার জীবন সুখেই কাটিত, কিন্তু তাহাকে তখনকার নিয়ম কানুন অনুযায়ী গৃহবন্দী হইয়া থাকিতে হইতো।
গল্প এই পর্যন্ত ঠিক ছিলো, কিন্তু সমস্যা দেখা দিলো কুমুদের দাদা বিলাত হইতে তিনটা পাশ করিয়া ফিরিয়া আসিলে, সে আসিয়া কহিলো কুমুদ লেখাপড়া শিখিবে, কেবলমাত্র নির্জলা উপবাস করিয়া জীবন কাটাইবে না।
বিদ্যাসাগর মহাশয় মেয়েদের শিক্ষা নিয়া অনেক ব্যবস্থা করিয়াছেন, কুমুদ বিদ্যালয়ে যাইবে আর পড়াশোনার পাশাপাশি শিল্পকর্মও শিখিবে, খেলাধুলাও করিবে। রায় বাড়ীতে বড় ছেলের কথা মান্য করা হইতো, তাই কুমুদের বন্দীদশা ঘুচিলো কিন্তু অন্য অশান্তি দেখা দিলো। তাহার বয়সী মেয়েদের অভিভাবকরা এই রীতিকে প্রশ্রয় দিলো না ফলে কুমুদ সখীহীন হইলো, কিন্তু কুমুদ দমিবার পাত্রী নয়। সে সকলকে বুঝাইয়া গুটি কতক ছাত্রী জোগাড় করিলো, পড়াশোনায় মোটামুটি ভালোই ছিলো, ইস্কুল পাস করিলে দাদা পুনরায় বিবাহের চেষ্টা করিতে লাগিলো, ততদিনে। বিদ্যাসাগর মহাশয় বিধবা বিবাহ আইন পাশ করিযাছেন, সেই হেতু দাদা বোনের বিবাহের জন্য ব্যস্ত হইলো।
কুমুদ ছোটবয়সে বিবাহ নামক প্রণালী সম্পর্কে কোনো ধারণা করিতে পারে নাই, এখন দেখিলো এবং বুঝিলো আইন পাশ হইলেও বাল্য বিধবার বিবাহ সহজ নহে, নারী ঘরে পচিয়া মরিবে কিন্তু বাহিরের জগতে যাইতে পারিবে না।
কুমুদ দুই একবার দাদার কথা মানিয়া পাত্রপক্ষের সামনে বসিলো, কিন্তু তাহাদের প্রথা শুনিয়া নিজেই নাকচ করিলো।
কুমুদ নিজেই গ্রামের মেয়েদের লেখাপড়ার পাঠ দিয়া তাহাদের মানসিক শক্তি বাড়াইতে লাগিলো, নানারূপ কুসংস্কারাচ্ছন্ন মনোবৃত্তির বাহিরে যে একটা সুস্থ জগত আছে সে তাহাদের শিখাইলো, এ কাজে তাহাকে প্রচুর অসুবিধার সামনে পড়িতে হইলেও সে পশ্চাদপদ হয় নাই।
এত অবধি গল্প মোটামুটি ঠিক চলিতেছিলো, এইবার ঘটনায় নয়া মোড় আসিয়াছে, কুমুদিনীর পাশের বাড়ীতে কোলকাতা হইতে এক মাষ্টার আসিয়া ছেলেদের স্কুলে জয়েন করিয়াছে, বিশ বছরে গ্রামে প্রচুর উন্নতি হইয়াছে, মেয়েদের ইস্কুল ছেলেদের ইস্কুল সব কিছুই কুমুদ আর ওর দাদার আন্তরিক প্রচেষ্টায় গঠিত হইয়াছে, মেয়েরা এখন চারদেয়ালের মধ্যে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে অশিক্ষিত গৃহবন্দী অবস্থায় দিনযাপন করে না, জ্ঞানের আলো গ্রামে প্রবেশ করিয়াছে।
খোঁজ লইয়া জানা গেছে নতুন মাষ্টার এখনও বিবাহ করে নাই সাংসারিক কারণে, এক্ষণে সে ছাদে বিচরণরত কুমুদকে দেখিয়া কিঞ্চিত বিচলিত হইয়াছে, সম্ভবত: সমাজসংস্কারক কুমুদ এবং সংসারসুদারক মাষ্টার কুমুদের দাদার পরামর্শে একত্র থাকিবে।
কুমুদ দৃঢ় ব্যক্তিত্বসম্পন্না সুন্দরী এবং স্বাধীনচেতা, সাধারণ জনতার ভাষায় দজ্জাল কিন্তু মানুষটির কাজে সারা গ্রাম উৎসাহিত। অলিখিত লকডাউন হইতে নারী জাতিকে মুক্তি দিয়াছে।।
শিল্প সাহিত্য ১০৭
রানা জামান
শিল্প সাহিত্য ৯১
শুভা গাঙ্গুলি
আরব্য উপন্যাসের সেই বাদশা যিনি গল্প শেষ হলেই স্ত্রী’র গলা কাটতেন, তাঁর পাগলামির জবাব দিয়েছিলেন এক বিদূষী রমণী প্রমাণ করেছিলেন মহিলারা সর্বপ্রকার গুণের অধিকারী, সেক্ষপিয়ের ও সেটাই বলেছেন তাঁর শাইলক গল্পে।
আর মহীয়সী যামিনী সুন্দরী ও প্রমাণ করেই ছাড়লেন তাঁর লোহার সিন্দুক থেকে সোনার সীতাহার চুরি করেছে, শহর থেকে কিছুদিনের জন্য খুড়তুতো দিদির বনেদি বাড়ীতে বেড়াতে আসা, লেখাপড়ার জানা, সুন্দরী ফটফট কথায় কথায় ইংরাজী ঝটকা মারা এলিস বোস।
কিন্তু ঘটনাটা অন্যদিকে টার্ন নিতেই পারতো, নিচ্ছিলোও ঠিকমতো,
বাধ সাধলো বহুদিনের পুরোনো ডেইজি একটি রাস্তার নেড়ি কুকুর, যাকে যামিনী দেবী রথের মেলা থেকে কুড়িয়ে আনেন,
বাড়ীর পুরোনো চাকরবাকর’দের চেনা একটা ছেলেকে মালীর কাজ দিয়ে বহাল করেছিলেন, সে একটু চনমনে ঠিকই, সময়ে অসময়ে হুটহাট করে যেখানে সেখানে ঢুকে পড়ে ঠিকই, সন্দেহজনক মনেই হয়। তবে চুরি সে করেনি সেটা প্রমাণ করলো ডেইজি।
চোস্ত প্যান্ট পরে মেমসাহেব ছেলেটিকে দোষী সাব্যস্ত করে বাড়ীর গাড়িতে উঠবেন
এমন সময় প্রচন্ড বেগে ডেইজি এলিসের পশ্চাৎদেশে মারল এক জব্বর কামড়।
ভরা জনতার সামনে প্যাণ্টের পিছনের ভাগ অনেকটাই, রমণীর
শীলতা হানি করে ছিঁড়ে নামালো
বন্ধুবৎসল ডেইজি,
রাস্তায় ছড়িয়ে পড়লো টুকরো টুকরো করে কাটা হার পশ্চাৎ দেশ উন্মুক্ত করেই,
মালীকে পরম ভালোবাসায় আপাদমস্তক চেটে গিন্নীমার কোলে বসলো ডেইজি।
হতভম্ব এলিসের লজ্জা নিবারণ করলো দিদি নিজের আঁচল দিয়ে,
পিসিমা যামিনী দেবী বললেন- লজ্জার কিছু নেই, ডেইজি ফিমেলডগ,
সব মিটে গেলে, মেয়েটিকে মুক্ত করে যামিনী দেবী বললেন-
অহংকারটা ওই পচা পুকুরটায় ফেলে বাড়ী যাও,
আক্কেলটা হওয়া ভালো।
তবে কেউ জানে না ওটা গিল্টি করা হার ছিলো।।
শিল্প সাহিত্য ৮৮
না,গল্প নয়
জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়
পালস বিট দেখতে গিয়ে ডা. বসাক দুটো স্পন্দন পেলেন। অজান্তেই চমকে উঠেমূর্ছিতার মুখের দিকে তাকিয়ে দেখেন সেই নিষ্পাপ পবিত্র মুখে বেদনার আলপনা।ডা.বসাকের মন খারাপ হয়ে যায় কুমারী মেয়ে অনেক যন্ত্রণা অপমান সহ্য করতে হবে।সুশ্রী মেয়েটির মুখে এক অদ্ভুত মায়া। মনে অপত্যস্নেহের ঢেউ। বন্ধু দয়ালকে বলেন, একে কোথায় পেলি?Ñআখন বাজার দিয়ে আসছি হঠাৎ দেখি মেয়েটা অজ্ঞান হয়ে পড়ে যাচ্ছে। সবাই মিলে তুলে রিক্সায় তোর চেম্বারে নিয়ে এলাম।Ñকার মেয়ে কোথায় বাড়ি জানিস?Ñসে ঠিক জানা যাবে। ভাবিস না। তুই সুস্থ করে তোল দেখি।
জ্ঞান ফেরার পর আস্তে আস্তে ডা.বসাক সব জানলেন। তাঁর মুখে রামধনুর আনাগোনা।মনে পড়লো কদিন ধরেই তাঁর ছেলে একটি মেয়েকে বিয়ে করার বিষয়ে মায়ের সঙ্গে জেদাজেদি করছে। বুদ্ধিমান ছেলে তাড়াহুড়োর কারণ মাকে জানায়নি। তবুও তিনি রাজি নন, ছেলেও অনড়। তিনি তখন মাঠে নামেননি, আজ একেবারে রেফারির ভ‚মিকায়।ভুল হয়তো করেছে কিন্তু ছেলে দায়িত্ব অস্বীকার করেনি, এজন্য তিনি গর্ব অনুভব করেন। এখন ছেলেকে নায়ক ও স্ত্রীকে দজ্জাল ভিলেন মনে হয়।অসম্ভব সম্ভব হলে গল্পই মনে হবে, তবু সত্য হোলো, বিনু এখন ডা.বসাকের পুত্রবধু।এবং তিনি ও তাঁর স্ত্রী তৃতীয় প্রজন্মের অপেক্ষায় দিন গুনছেন।
শিল্প সাহিত্য ৮৭
অনিন্দ্যকেতন গোস্বামী
শিল্প সাহিত্য ৮৪
বস্ত্র বিতরণ ।। প্রণবকুমার চক্রবর্তী
ক্লাবের জন্মদিনে সামনের মাঠে গরীবদের বস্ত্র দেয়া হচ্ছিলো। অন্যান্যদের মতো ওর নামটাও বার বার মাইকে বস্ত্র প্রাপক হিসেবে ঘোষণা করা হচ্ছে। সব্বাই সুন্দরীর মতো বয়সের। বলা হচ্ছে- এক্ষুণি গিয়ে ক্লাবে সভাপতির সাথে দেখা করতে। নিবারণের বছর পনের-ষোল বছরের মেয়ে সুন্দরী তো রীতিমতো অবাক - ওর নামটা বারবার উচ্চারিত হওয়ায়। ওকে এখানে কেউ চেনেনা। জানেনা। কোনদিন এই রকম বস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে আগে কাপড়ও নেয়নি। অথচ, ওর নামটা ডাকছে!
সুন্দরীর কাপড়টা প্রয়োজন । লোভও হচ্ছে নেবার, কিন্তু যেতে ভয় হচ্ছে। কী করবে, বুঝে উঠতে পারছে না। একপাশে সরে দাঁড়িয়ে সুন্দরী যখন ব্যাপারটার উপরে নজরদারি চালাচ্ছে, সেই সময় ক্লাবের, ক্লাবেরই একজন লোক এসে ওকে সভাপতি ডাকছেন বলে সঙ্গে নিয়ে যায়। সুন্দরী সভাপতিকে দেখেই বলে ওঠে - ই মানুটা ইখানেতে আসিএেঁ জুটিছে! মুই, উয়ার দিয়া কাপড়টো লিবোক নাই। ই মানুষটা মোট্টে ভাল্যো লয়। ই মানুষটা আজ যাদের সব
কাপড়টো দিচ্ছেক, পরেতে উয়াদের মধ্যে থেইকে কম বয়সের মেয়েগুলারে বাড়িতে ডাইকে পাঠাএিঁবে। বুঝিছেন নাই, উ মানুষটার চরিত্তিরটা বহুত খারপ বটে। মুই চললোম।
ব্যাপারটা শুনে অনুষ্ঠানে হাজির থাকা সবাই এ ওর মুখের দিকে চাওয়া-চাওয়ি করা শুরু করলো।
ক্লাবের জন্মদিনে সামনের মাঠে গরীবদের বস্ত্র দেয়া হচ্ছিলো। অন্যান্যদের মতো ওর নামটাও বার বার মাইকে বস্ত্র প্রাপক হিসেবে ঘোষণা করা হচ্ছে। সব্বাই সুন্দরীর মতো বয়সের। বলা হচ্ছে- এক্ষুণি গিয়ে ক্লাবে সভাপতির সাথে দেখা করতে। নিবারণের বছর পনের-ষোল বছরের মেয়ে সুন্দরী তো রীতিমতো অবাক - ওর নামটা বারবার উচ্চারিত হওয়ায়। ওকে এখানে কেউ চেনেনা। জানেনা। কোনদিন এই রকম বস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে আগে কাপড়ও নেয়নি। অথচ, ওর নামটা ডাকছে!
সুন্দরীর কাপড়টা প্রয়োজন । লোভও হচ্ছে নেবার, কিন্তু যেতে ভয় হচ্ছে। কী করবে, বুঝে উঠতে পারছে না। একপাশে সরে দাঁড়িয়ে সুন্দরী যখন ব্যাপারটার উপরে নজরদারি চালাচ্ছে, সেই সময় ক্লাবের, ক্লাবেরই একজন লোক এসে ওকে সভাপতি ডাকছেন বলে সঙ্গে নিয়ে যায়। সুন্দরী সভাপতিকে দেখেই বলে ওঠে - ই মানুটা ইখানেতে আসিএেঁ জুটিছে! মুই, উয়ার দিয়া কাপড়টো লিবোক নাই। ই মানুষটা মোট্টে ভাল্যো লয়। ই মানুষটা আজ যাদের সব
কাপড়টো দিচ্ছেক, পরেতে উয়াদের মধ্যে থেইকে কম বয়সের মেয়েগুলারে বাড়িতে ডাইকে পাঠাএিঁবে। বুঝিছেন নাই, উ মানুষটার চরিত্তিরটা বহুত খারপ বটে। মুই চললোম।
ব্যাপারটা শুনে অনুষ্ঠানে হাজির থাকা সবাই এ ওর মুখের দিকে চাওয়া-চাওয়ি করা শুরু করলো।
শিল্প সাহিত্য ৮৩
উপহার
আম্মানসূরা
স্বামী- এই নাও বিশ হাজার টাকা। এই মাসের পাঁচটা দাওয়াতের গিফট এরমধ্যে সারবা। কারে কত গিফট করবা সেটা তুমি ভেবে বের করো। আমি অফিসে গেলাম। স্বামী অফিসে যাবার পর স্ত্রী হিসাব কষতে বসেন, “সালেক সাহেব বিশাল ধনী মানুষ, তার জন্য দশ হাজার রাখতেই হয়। জয়ন্ত বাবু ত বেশ বড় নেতা। তাকে পাঁচের নিচে দেয়া যাবেই না। পাশের বাড়ির ভাবির মেয়ের জন্মদিনের গিফট দুই এর নীচে দিলে প্রেস্টিজ থাকবে না। শেফা ভাবির ম্যারেজ ডে’তেও নাহয় দুই এর মধ্যে একটা শাড়ি দিব। কাজের বুয়ার নাতির জন্মদিনের জন্য এক হাজার টাকা, দুই দিতে পারলে ভাল হত, থাকগে, ও গরিব মানুষ, ওরে এক দিলেই খুশি হবে।” পাঁচটা দাওয়াত শেষে স্ত্রী দেখলেন, কেবলমাত্র বুয়ার দাওয়াতেই তার জন্য স্পেশাল বসা, খাওয়া ও ঘরের ব্যবস্থা করে তাকে স্পেশাল মানুষের সম্মান দেয়া হয়েছিল আর সালেক সাহেবের অনুষ্ঠানে সবচেয়ে বেশী সাধারণের কাতারে ছিল সে।
আম চোর ও ছোট বাবু
সাঈদুর রহমান লিটন
বাবুদের আমের বাগান। খুব সুপরিচিত বাগান। দীর্ঘ দিন ধরে বাগানটির সুনাম, দুর্নাম ছড়িয়ে আছে। আমাদের হাই স্কুলের পাশে বাগান। প্রতিবারের মত এবার ও আম ধরেছে। বাবুদের আম বাগানের বিশেষত্ব হলো বাগানের প্রতিটি গাছের আম কাঁচা মিঠা । কাঁচা মিঠা আমের মজাই আলাদা। চাকু দিয়ে কেঁটে কচকচ করে চিবিয়ে খেলে মনে হয় নাটোরের কাঁচা গোল্লা খাচ্ছি। কাঁচা মিঠা আমের লোভ সামলানো বড় দায়। বাবু বাড়ির ছোট বাবু আম বাগানে টঙ উঠিয়ে পাহারা দেয়। আম বেথুলের মত ধরে ঝুলে আছে। সবুজ আম। ছোট গাছ। আম গুলো যেন আমাদের দিকে চেয়ে থাকে। বাগানে অনেক আমের গাছ। আমরা স্কুলের দশম শ্রেণির ৪/৫ জন বন্ধু সিদ্ধান্ত নিলাম বাবুর কাছ থেকে চেয়ে কাঁচা মিঠে আম খাব। অনেকে অনেক মন্তব্য করল, তার মধ্যে দিদার বলল বাবু যে কুঞ্জুস চাইলে দিবে না। হারাণদের বাড়ি বাবুদের বাড়ির পাশে। হারাণ, বাবুর আচার আচারণ ভাল জানে। ও বলল বিষ্ণু কাকু জান থাকতে একটা আম ও দিবে না। ছোট বাবুর নাম বিষ্ণু গোসাই। তবু ও আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম আমরা বাবুর কাছে আগে আম চেয়ে দেখবো যদি দেয় তাহলে খুব ভাল না দিলে অন্য ব্যবস্থা করবো। আমাদের খেতেই হবে আম, তা যে ভাবেই হোক। আম তো আমরা খাবই। আমাদের দলে আম খাওয়ার বন্ধু সংখ্যা বাড়তেই লাগল। অবশেষে গেলাম ছোট বাবুর কাছে বললাম দাদু আমরা চার পাঁচ জন বন্ধু কাঁচা মিঠে আম খেতে চাই। দাদু বলা মাত্রই তেলে বেগুনে জ্বলে উঠল। আম খাওয়ার কথা শুনেই আর কোনো কথা না বলেই দিল লাঠি দিয়ে ধাওয়া। আমরা হাঁপাতে হাঁপাতে স্কুলের পর চলে এলাম। কিন্তু আমরা আমের লোভ ছাড়লাম না। তারপর দিন, কাকলীকে ডেকে আমাদের দলে নিলাম। কাকলী আমাদের বান্ধবী। খুব সুন্দর। ভারি চালাক মেয়ে। দারুণ বুদ্ধি রাখে। ছোট বাবুর একমাত্র মেয়ে ঢাকায় থাকে। কাকলীকে মেয়ের মত ভাবে। কাকলীকে মা বলে। তাই ভাবলাম কাকলীকে ব্যবহার করবো। কাকলি ও রাজি হলো। কাকলী কে মেয়ের মত ভাবলেও একটা আম ও দেয় না। কাকলীর ও আম খাওয়ার লোভ আছে। আমরা এখন আম খাওয়ার দলে ২৫/৩০ জন। আমাদের কথা হলো কাকলী, শিল্পী, সোহেলী, সুচিত্রা, মাধুরী ওরা বাবুর সাথে গল্প করবে আমরা বাগানের অপর প্রান্তে আম পাড়বো। ভাবনা মতই কাজ শুরু হলো ওরা বাবুর সাথে গল্প জমিয়ে তুলে আমরা কয়েক জন টিফিন টাইমে আম পেড়ে আনতে শুরু করলাম। আম খাওয়া এভাবে নিয়মিত চলছে। বাবু কাকলীদের সাথে নিয়ম করে সারা দুনিয়ার গল্প জুড়ে দেয়। টিফিন শেষ হলে ওরা চলে আসে। আমরা আম খাই। আমাদের সাথে আরো অন্য ক্লাশের বন্ধুরাও যোগ দিয়েছে। কয়েক দিনে আমের বাগানে আম প্রায় শেষ হতে চলল। শুধু বাবু যেখানে পাহারা দেয় ওখানে কয়েকটা গাছে আম আছে। আমরা হরদম কাঁচা মিঠে আম খেয়ে চলছি। বাবু ওখানে বসে থাকলে আর আম পাড়তে পারছি না। তাই কাকলী বাবুকে বলল কাকু, আজকে আপনাদের বাড়ি যেয়ে গল্প করব। এখানে আর ভাল লাগে না। বাগান তো নানা জনে না কথা বলে। বাবু মেয়েদেরকে মেয়ের মত মনে করে আমের কথা ভুলে যায়। যথারীতি বাবুদের বাড়ি টিফিনের সময় আড্ডা শুরু হলো বাবু ও খুব খুশি। কাকলীদের চা মুড়ি খেতে দেয় প্রতিদিন। বাবু আর বাবুর স্ত্রী এবং কাকলীরা আসর জমিয়ে তোলে। আর আমরা নির্বিঘ্নে আম পাড়তে শুরু করি।
শিল্প সাহিত্য ৮০
রাজা ভট্টাচার্য
প্রণবকুমার চক্রবর্তী
শিল্প সাহিত্য ৭৪
চম্পাকলির দিনরাত্রি
স্বপঞ্জয় চৌধুরী
শহরের ব্যস্ততম রাস্তা তার পাশে একটি পার্ক। পার্কে লাগানো সারি ঝাঊগাছ, নানা পদের দেশি বিদেশী ফুলের গাছ। প্রাত ভ্রমণে বুক ভরে নিশ্বাস নেয়ার একটি জায়গাই আছে ফ্রিডম পার্ক। এখানে সবাই বুক ভরে স্বাধীন ভাবে নিশ্বাস নিতে পারে। যারা এখানে নিয়মিত মর্নিং ওয়াকে আসেন তারা হয়তো দেখে থাকবেন। একটা দশ বারো বছরের মেয়ে প্রতিদিন ভোর বেলা এখানে শিউলি ফুল কুড়াতে আসে। ফুল ভালোবাসে এজন্য নয়, এ ফুল কুড়িয়ে ওরা মালা তৈরি করে। শুধু ও নয় ওর মতো অনেকেই ফুল কুড়ায় এই পার্কে। মেয়েটির নাম চম্পাকলি। জন্মের সময় দাদি নাম রাখতে চেয়েছিল চম্পা আর নানি রাখতে চেয়েছিল কলি। নাম রাখা নিয়ে সেকী বিশাল বাহাস। তারপর বাপ বুদ্ধি দুইজনের নামই চ‚ড়ান্ত করেন -ওর নাম হবে চম্পাকলি। আজ দাদি, নানি, বাপ কেউই বেঁচে নেই। ভিটে বাড়িটাও গিলে খেয়েছে নদী। বাবা বেঁচে থাকলে হয়তো তাকে এই ফ্রিডম পার্কে ফুল কুড়াতে হতো না। প্রতিটি শিউলি ফুলের ভেতর সে এক একটি ভাতের দানার ছবি দেখতে পায়।
ওদের মহাজন কলিমুদ্দি সরদার। বিশজনের ফুল কুড়ানো ও ফুল চুরি করার একটা টিম আছে। ফুল কুড়িয়ে মালা বিক্রি করে কমিশন দিতে হয় কলিমুদ্দিকে। দুইশ টাকা ফুল বেঁচলে পঞ্চাশ টাকা কলিমুদ্দির। এভাবে প্রতিদিন বিশজনের কাছ থেকে মোট এক হাজার টাকা কমিশন আদায় করে কলিম। চম্পাকলির মা বাসায় কাজ করে। চম্পাকলি ফুল বিক্রি চাল, ডাল, তেল, নুন এসব কিনে নিয়ে যান। গায়ে গতরে বড় হয়ে যাচ্ছে মেয়েটা। মায়ের তাই অনেক চিন্তা। এভাবে আর কতদিন ফুল বিক্রি করে চলবে। আর কয়েক বছর গেলে তাকে গার্মেন্টস এ চাকরি নিতে বলবে। আজ খুব বেশি বেচা বিক্রি হয়নি। শহরের মানুষগুলো বেরসিক হয়ে যাচ্ছে দিনদিন। ফুল কেনা কমিয়ে দিয়েছে। এখন প্রেমিক প্রেমিকারা পার্কে যায় না। তারা ঘুরতে যায় রেস্টুরেন্ট অথবা সিনেপ্লাক্সে। তার উপর দেশে নাকি কী এক ভাইরাস এসেছে তাই রাস্তাঘাটে গাড়ি ঘোড়া মানুষজন দিনদিন কমে যাচ্ছে। সামনের সপ্তাহ থেকে নাকি গাড়ি ঘোড়া সব বন্ধ করে দিবে। তখন কী হবে? মায়ের কামাই চলে যায় ঘর ভাড়া দিয়াই। আগে মা পাঁচ- ছয়টা বাসায় কাজ করতো। গেলোবার টাইফয়েড হয়ে শরীরের বল কমে গেছে। ভারী জিনিস উঠাতে পারেনা তেমন। দুই তিনটা পুরোনো বাসায় তাকে কাজে রেখেছে। তাই বাধ্য হয়েই তাকে ফুল বিক্রি করতে হয়। নতুবা তাদেরকে না খেয়ে থাকতে হবে।
সপ্তাহ খানেক পর শহরে লকডাউন ডাকা হলো। চম্পাকলির মা শোমেলাকে বেতন দিয়ে আপাতত এক মাসের জন্য বিদায় দিয়েছে। বেতনের টাকা বস্তির ঘর ভাড়া দিয়েই শেষ। ফুল বিক্রি বন্ধ। রাস্তায় গাড়ি নেই মানুষ নেই। পুলিশ যাকে দেখছে তাকেই লাঠি পেটা করছে। কলিমুদ্দিরও ধান্দা বন্ধ। এদিকে শোমেলার শরীরেও জ্বর। ঘরে চাল ডাল নেই। শুনেছে বড়লোকেরা নাকি রাস্তায় এসে চাল, ডাল, আটা, মুড়ি দিয়ে যাচ্ছে। চম্পাকলি খাবারের সন্ধানে ঘরের বাহির হয়। অনেক ক্ষণ রাস্তায় দাঁড়িয়েও কোন ত্রাণদাতার দেখা পেলোনা। আজ তাদের না খেয়ে থাকতে হবে। মায়ের জ্বর বাড়ছে ক্রমশ। একটা ওষুধ পাতি কিনে দিবে সেই টাকাও নাই। বিষণ্ন মনে সে বস্তিতে ফিরে আসে। বস্তির মোড়ে কলিমুদ্দির সাথে দেখা। কলিমুদ্দি নাকি নতুন কোন ব্যবসা বাহির করছে শর্টকাটে ইনকাম। চম্পাকলি তার কাজের কথা জিজ্ঞাসা করে। কলিমুদ্দি খিল করে হেসে বলে। এই ব্যবসা হইলো ত্রাণের ব্যবসা। যাবি ত্রাণ নিবি সেইখান থিকা আমারে কমিশন দিবি, যাবি? চম্পাকলি সরল মনে মাথা নাড়ে। সে কলিমুদ্দির সাথে পাশের গলিতে এক অভিজাত বাড়ির ভেতরে যায়। দারোয়ানকে আগে থেকেই বলা আছে সব। দারোয়ান কলিমুদ্দির দিকে তাকিয়ে বুড়ো আংগুলের থামস আপ দেখায়। চম্পাকলির বাড়ির ভেতরে পা রাখা মাত্রই তার বুকের ভেতরটা ধক করে উঠলো। পাঁচতলা ফ্ল্যাটে ওকে ঢুকিয়ে দিয়ে নিচে চলে আসলো কলিমুদ্দি। ফ্ল্যাটের মালিক শরাফত সাহেব বউ বাচ্চাকে পাঠিয়ে দিয়েছেন গ্রামের বাড়ি। চম্পাকলিকে আনার জন্য তাকে পাঁচ হাজার টাকা দিয়েছেন। এমন সুরভিত না ফোটা ফুলের দাম পাঁচ হাজার টাকায় বিকোলো? চম্পাকলির নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে। সে পালাতে পারছেনা, চিৎকার দিতে পারছে না। তার মতো দূর্বলদের জন্য এ পৃথিবী নয়। যে এতদিন ফুল কুড়িয়ে সংসার চালিয়েছে সে আজ নিজেই ফুল হয়ে গেছে। এক ঘণ্টা পর মাথা নিচু করে সে ফ্ল্যাট থেকে বেড়িয়ে আসে। তার চুল উস্কো খুস্কো, চোখ বিধ্বস্ত নীড় ভাংগা পাখির মতো। কলিমুদ্দি তার হাতে এক হাজার টাকার দুটো নোট ধরিয়ে দেয়, দারোয়ানকে এক হাজার টাকা দেয়। আর পকেট থেকে গুলের কৌটা টাবের করে ঠোঁটের ভিতর গুল গুজতে গুজতে বলে আমি কাউরে ঠকাই না। হে হে হে। চম্পাকলি এলোমেলো চুল গুচ্ছ খোঁপা করে নেয়। বাজার থেকে চাল, ডাল আর মায়ের জন্য ওষুধ কিনে নিয়ে যায়। তার পা গড়িয়ে পড়ছে ফিনকে ফিনকে কাচা রক্ত।
শিল্প সাহিত্য ৭১
আকাঙ্ক্ষা
লোকমান হোসেন
ইন্সপেক্টর রশিদ বারান্দা দিয়ে পায়চারী করছেন। কিন্তু পায়চারী ফোরাচ্ছে না। অথচ খুনী তখনও ঘরের মধ্যে। বুকশেলফের পেছনে হামাগুড়ি দিয়ে বসে আছে। লাশটা মর্গে এখনো। ডোম প্রস্তুতি নিচ্ছে কাটাকুটির। ডাক্তার সাহেব এখনো আসেননি।
ইন্সপেক্টর রশিদ তদন্ত কাজে খুবই দক্ষ। দেশের বেশ চাঞ্চল্যকর কয়েকটি হত্যাকাণ্ডের সুরাহা করেছেন তিনি। মার্ডার মিস্ট্রি গুলে খাওয়া মানুষ। তবুও এ কেসটা আগাচ্ছে না।
নিপাট ভদ্রলোক সাইমন সাকিব। একটা বহুল প্রচলিত দৈনিকের সম্পাদক। মাঝে মাঝে টিভি চ্যানেলে টকশোতে অংশ নিতেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষক হিসেবে খ্যাতি ছিল। হয়তো সেখান থেকেই শত্রুতার সূত্রপাত। ভিন্নমতের উপর শ্রদ্ধা, সহনশীলতা এদেশে নেই বললেই চলে।
দরিদ্র ছমিরন সারাদিন ভিক্ষা করে যা যোগাড় করে তাই দিয়ে দিনাতিপাত করে। একদিন রেলস্টেশন এ ভিক্ষা করার সময় স্টশনের পুরনো ওয়েটিং রুমের বাথরুমে একটা লোককে খুন হতে দেখে ফেলে সে। তারপর থেকে তাড়া খেয়ে নিরুদ্দেশ হয় ছমিরন।
কোন একটা বিশেষ জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্রের আঘাতে মারা যায় ওই এলাকার প্রবীণ একজন মানুষ। খুনীরা ক্ষমতাসীন দলের শ্লোগান দিতে দিতে চলে যায়। অতঃপর সেখানে সৃষ্টি হয় একের পর এক হত্যাযজ্ঞ।
অবাক হওয়ার বিষয় হচ্ছে তারা সবাই এক জায়গায় বন্দী।
নানা ধরণের বিচিত্র সব চরিত্র নিয়ে সবসময় ভাবনায় থাকেন নাফিস আহমেদ। স্ট্রোক জনিত কারণে হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মনে হতে থাকে, আহা চরিত্রগুলোকে যদি কোনো ভাবে মুক্তি দেয়া যেত!
অন্তিম মুহূর্তে একজন থ্রিলার লেখকের আর কি চাওয়ার থাকতে পারে!
শিল্প সাহিত্য ৭১
শহরের ভেতরের শহর
কৃষ্ণেন্দু দাসঠাকুর
মেয়ের খালি একটাই প্রশ্ন- “বাবা, এককথায় তুমার কোলকেতাকে কেমন লাইগে?” “আরে আমি কি তুর মতো লিখাপড়া জানা ম্যাইয়া মানুষ যি তুর মতো ওমনধারা কথা বলতে পারব। এই যি ‘পশ্নো’ তারপর হলো গিয়ে ‘এককুথায়’ ইসব কথায় তো আমার মুখ থেকা ভালো করে বের হয়লাকো।”
সি শুনে মেয়ের পরথম পরথম ইমুন ধারা হাসতো... তা বইললে হবে না হাসলে যেন মুখ থেইক্কা মুক্ত ঝরে পড়ে। মেয়েটা হওয়ার পর চম্পা বইললে- “শোনো, আর ছেলেপুলে লোবো না... ইকেই মাইনুষের মতো মাইনুষ কইরবো।” আমি বইললাম- “বেশ তাইই হবেক।”
বিড়িটা ধরিয়ে আপনমনে কথা বলতে বলতে প্রভু খেয়াল করেনি কখন পৌরসভার আর্বজনার গাড়িটা এসে গেছে। গাড়িটা ফাঁকা করে চলে গেলে, ও সেখান থেকে প্লাস্টিকের প্যাকেট, জলের বোতল, মদের বোতল তাছাড়াও টুকটাক নানান জিনিস আলাদা করে বস্তায় ভরবে। গাড়িটা আস্তে আস্তে ডালার পেছন দিকটা উঁচু করছে, আগে বেলচায় করে লোকেই ফেলতে, এখন আপনা-আপনি পড়ে; আগে অবাক হয়ে ওদিকে তাকিয়ে থাকত, এখন অভ্যেস হয়ে গেছে। ও এখন হাঁ করে তাকিয়ে আছে ওর সারাদিনের রোজগারের রসদ ঠিকঠাক পড়ছে কিনা।
গাড়ির ডালাটা নামতে নামতে যেন রাস্তার উপর উঠছে, ও একপ্রকার ঝাঁপিয়ে পড়লো। অন্যদিন ওর আসতে দেরি হয়ে যায়, আজ সক্কাল সক্কাল চলে এসেছে; অন্যেরা আসার আগেই ও কাজ হাসিল করে চলে যাবে।
প্রথমে গিয়েই একটা বড়ো ক্যারিপ্যাকেটে হাত দিল। এরকম প্যাকেট থাকলে ওর বেশ আনন্দ হয়। কারণ ওতে অনেক জলের বোতল একসাথে থাকে। আবার কোন মদের আসরের হলে, বড়ো অঙ্কের টাকাও পাওয়া যায়, “একি প্যাকেটটা হাত দিতেই এরকম নড়ে উঠল কেন?”
অতিসন্তর্পণে প্যাকেটের বাঁধা মুখটা খুলে ফেলল, “একটা আস্ত বাচ্ছা মেয়ে, মইনে হচ্ছে অখনই হইছে। কি গায়ের অং। একুনো বড়ো ঘইরের মেয়ে না হয়ে যাই না।” প্রভুর হাত পা কিরকম হিম হয়ে আসতে লাগলো। “এটা কি কারও পাপের ফইসল, নাকি মেয়ে হইছে বুলেই-” ও খুব ভয় পেয়ে মেয়েটাকে বুকে জড়িয়ে গুমরে উঠল। নিজের মেয়ের উদ্দেশ্যে বলতে থাকলো-“ওরে তুর প্রশ্নের এককথায় উত্তর আজ আমি দিতি পারব। সি তুই যতই লিখা পড়া করিস। আজ মুখ্য প্রভুর কথাকে কাটতে তুই তো ছাড় গোটা কোইলকেত্তা পারবেক লাই।”
শিল্প সাহিত্য ৬৭
রুখসানা কাজল
শিল্প সাহিত্য ৬৬
সাঈদুর রহমান লিটন
শিল্প সাহিত্য ৬৫
একদিন আমরাও অমানুষ হয়ে যাবো
বঁঁধন অধিকারী
আমারও ইচ্ছা ছিলো মানুষ হয়ে বাঁচবো, কিন্তু ইতর শ্রেণির অমানুষগুলো আমাকে থাকতে দেয় নি। থাকতে দেয় নিমামরা মেয়েটাকেও! অসহ্য যন্ত্রনা নিয়ে মরে ছিলো টিকলির মা।
সেদিন ঘোর অমাবস্যা রাত, টিকলিকে ঘুম পাড়িয়ে... টিকলির বাবার অপেক্ষায় বসে ছিলো টিকলির মা। হঠাৎ একটা আওয়াজ শুনলো, মনের ভেতর কেমন যেন করে উঠলো? টিকলির মায়ের...
সামনে হাজির এলাকার কুত্তারা, সাথে কয়েকটি পোষাবিড়াল। টিকলি মা উঠতি বয়সী মহিলা, চোখে পড়েছে কুত্তাদের... আর রেহাই নেয়! ধর্ষণ করলো টিকলির মাকে! টিকলির বাবা তখনো বাড়ি আসেনি, যখন আসলো তখন ভাঙাঘরের একপাশে পড়ে ছিলো টিকলির মা। টিকলির বাবা বিমর্ষ হয়ে মুখের দিকে তাকিয়ে রইলো কিছুক্ষণ।
১২ বছর পর,
টিকলি এখন ক্লাস টেনে পড়ে, দেখতে শুনতে মোটামুটি ভালোই। যে কোনো বয়সী পুরুষ তার প্রেমে পড়তে বাধ্য। কিন্তু খারাপ চোখ তো শকুনেই দেয়। এবার রেহাই পেলনা। তাদেও উত্তরসূরীরা তাকেও ঠিক তার মায়ের মতোই ভোগ করলো।
বিচার চাইবার যায়গা নেই! বিচার করার লোকও নেই। যারা বিচার করে, তারা সবাই একই গোয়ালের গরু। ধাপে ধাপে বংশক্রমে লুটধর্ষণ করেই যাবে, কোনো কথা বলার থাকবেনা। আমরা গরীব সারা জীবনই মার খেয়ে যাবো। আমরা গরীব সারা জীবন ধর্ষিত হয়ে যাবো। একদিন এমনই করে আমরাও অমানুষ হয়ে যাবো।
উড়তে পারিনি
তপনকুমার দত্ত
তিড়িং তিড়িং করে উড়ে উড়ে এসে স্বপ্নময়দের গন্ধরাজ লেবু গাছে বসছে কত রঙে সাজা কুট্টি কুট্টি পাখিগুলো। স্বপ্নময় ভাবছে- দেখবো, নাকি মোবাইল ক্যামেরায় বন্দি করবো। ভাবতে ভাবতে মোবাইল ছাড়াই মজা পেল আরো। একটি দুটি কুরুক কুরুক করে মিষ্টি ডাকে জমিয়ে দিল কান। ভরিয়ে দিল প্রাণ। স্বপ্নময় আরো নীবিড় হতেই ফুরুৎ ফুরুৎ করে উড়ে গেল সব। একেই বলে পাখিদের ইচ্ছে। স্বপ্নময় বলে ওঠে- ‘যা। চলে গেলি। আবার আছিস।’ আর ভাবতে থাকে-হয়তো দূরে আরো কোথাও আরেক গাছে বসে গল্প-গানে জমিয়ে তুলবে ওরা। হয়তো ওদের মধ্যে সৃষ্টির উল্লাসে মাতবে দু’জন একান্ত কোনো ডালে।
স্বপ্নময় ঘরে ঢুকে বিড়- বিড় করে বলে-কত ইচ্ছে পূরণ হয়নি আজও। শুধু তোদের মতো উড়তে পারিনি বলে।
চিরসবুজ চলাচলে
বঙ্কিম কুমার বর্মন
এই দেহভার খুঁটে রাখি। সূর্যাস্ত আক্রান্ত ছিঁড়ে ফেলি উটকো ঝামেলায়। হাসির আস্তরণে জমে উঠছে ধূলোবালির সারল্য, তাতে প্রতিবেশী মাঠ ঢেলে দিয়েছে সতেজ উদার। শুধু কিছু অন্ধকারের নির্যাস দু’হাতে মেখে ততবার জিভে বুঝে নিয়েছি আগুনের স্বাদ। অসামর্থ্য সংসারের হালে পাঁচিলের যাবতীয় পেশি সেঁকে নিচ্ছে উষ্ণ বিরহের তরতাজা বুক। কোনো জলশব্দের গোপন প্রহর দু’পায়ে ঠেলে চলেছে আমার বয়স। শক্ত হাতের মুঠোয় রেখেছি ভিন্ন উড়ানের কাহিনি। যার সমস্তটাই শুরু অরণ্যের ভ‚মিতল দিয়ে। হেলে পড়ে বনাঞ্চল চুলখোলা বারান্দার সিঁথিতে। এইসব নিশিযাপন খুনসুটি ডানা ঝাপটায়, তাঁদের অপূর্ব ঋতুরা পাড়ি জমায় ময়ূরপঙ্খীতে। কতবার সিঁড়িও চালিয়েছে স্নেহময় শূন্যের সাইকেল। গলে যাচ্ছে নিশ্চিত কেউ আমাদের ফেরিময় পেয়ালায়। কিছু ভাবনার গলি টুকটাক খসে পড়ে, তাঁদের ডানায় রাশি রাশি নুনের যৌবন উদযাপিত হয়। আমি সেইসব স্পর্শ বিকিয়ে দিয়ে পিপীলিকার মিষ্টি শিকার শিখছি হৃদয়ের চিরসবুজ চলাচলে।
শিল্প সাহিত্য ৫৮
শেষ ইচ্ছে
জাহিদুল মাসুদ
এক ফাঁসির আসামীকে জিজ্ঞেস করা হলো, ‘আপনার জীবনের শেষ ইচ্ছা কি? আপনি কি বিশেষ কারও সাথে দেখা করতে চান?’
আসামী উত্তর দিল, না।
‘আপনি কি বিশেষ কোন খাবার খেতে চান?’
‘না।’
‘আপনার জীবনের কি এমন কোন সাধ ছিল যা এখনো পূরণ হয়নি?’
‘মৃত্যুকে সামনে রেখে মানুষের মাথায় এসব চিন্তা আসে কি করে?’
‘তাহলে আপনার বিশেষ কোন ইচ্ছা নেই?’
‘আছে। কিন্তু তা আপনারা পূরণ করতে পারবেন না।’
‘বলুন, শুনি।’
‘আমি একবার মৃত্যুকে দেখে ফিরে আসতে চাই। দেখাতে পারবেন?’
‘বলেন কি! তা কি করে হয়? তবে একটা গবেষণা সংস্থা আছে, ‘নেয়ার ডেথ এক্সপেরিয়েন্স’। কিছু রুগী এই গবেষণায় মৃত্যুর কাছ থেকে ফিরে আসে। কিন্তু পুরোপুরি মৃত্যুর পর কেউ ফিরে আসে না। সর্ব শক্তিমান ছাড়া এ ক্ষমতা মানুষের নেই।’
‘তাহলে আমার কোন শেষ ইচ্ছে নেই।’
শিল্প সাহিত্য ৫৭
সুখ
নুসরাত রীপা
তপনকুমার দত্ত
যখন তোমার না থাকা কিছু আমি দিতে পারি, তখন তোমার পূর্ণতা দেখি আকাশ ভরা তারার মতো। যখন আমি বহু ভাবনার চাপে নীরব উদাসী হয়ে থেমে পরি, তখন তুমি এসে ‘থামলে হবে না আমি আছি’ বলে এক পশলা বৃষ্টির মতো চনমনে করে তোলো আমার হৃদয় প্রান্তর।
একেই বলে প্রেম । প্রেম তো প্রেমই।
ধীরে ধীরে ঘনিষ্ঠতা। ঝিরঝিরে হাওয়ায় জাগে প্রেম। উভয়েই হৃদয় যাপনে হয়ে ওঠে কাছাকাছি জমাট বরফ। বরফ গলে প্রেমের উত্তাপে, ঘটে ঝরণা প্রবাহ। সৃষ্টি হয় নতুন জাতক। জাতকের প্রেম। আবার পূর্ণতা। ঘনিষ্ঠতা। বরফ। ঝরণা। জাতক।
এইভাবে দিনদিন বেঁচে থাকে অন্তর্হীন প্রেমের ধারাপাত ।
সিকান্দারনামা
লোকমান হোসেন
প্রণবকুমার চক্রবর্তী
শিল্প সাহিত্য ০৯ বুধবার ৯ই বৈশাখ ১৪২৭, ২২ই এপ্রিল ২০২০
জামা
আমিনুল ইসলাম সেলিম
শিল্প সাহিত্য ০৪ শুক্রবার ৪ঠা বৈশাখ ১৪২৭, ১৭ই এপ্রিল ২০২০gvqv†gvnv¤§` RwmgNyg fvO‡ZB GK Qz‡U Iqvkiæ‡g- bv Kivi g‡Zv †Kvbg‡Z eªvk K‡i gy‡L cvwbi SvcUv w`‡q †eWiæ‡g wd‡i G‡jv AvwbKv|wP‡ji g‡Zv †Quv †g‡i mvBW e¨vMwU Zz‡j wb‡jv †m| MZiv‡Z ¸wQ‡q ivLv RvgvKvco Avi UzKUvK `iKvwi wRwbmcÎ G‡K G‡K e¨v‡M fi‡Z jvM‡jv| mewKQy fiv n‡q †M‡j GKUz nuvd †Q‡o evuP‡jv †hb| PzcPvc `uvwo‡q fve‡Z jvM‡jv wKQz ev` co‡jv wK bv|evievi Nwo †`L‡Q AvwbKv| Nwo‡Z ZLb 5Uv 23|GZUzKz e¨v‡M Lye †ewkwKQy †bqvi my‡hvM †bB| MZ Rb¥w`‡b evevi †`qv njy` †WªmwUi Rb¨ gbLvivc nq AvwbKvi| †WªmwU‡K †ei K‡i e¨v‡Mi cv‡k ivL‡jv †m| gbLvivc n‡jv `v`xgvi †`qv Rwicvo †giæb kvoxwUi Rb¨| †mwU‡KI G‡b nv‡Zi Kv‡Q ivL‡jv|mg‡qi mv‡_ mv‡_ evo‡Z _v‡K gbLviv‡ci gvÎv| G evwo‡Z Avi †Zv †divi m¤¢vebv †bB, A_P-¯§„wZweRwoZ gvj-mvgvb¸‡jv †hb Ki‡Rv‡i wgbwZ Ki‡Q m‡½ hv‡e e‡j| AvwbKvI Zv‡`i‡K nvZQvov Ki‡Z Pvq bv|AvwbKvi ¯§„wZKvZi †Pv‡Li mvg‡bB ÿz`ªvqZb e¨vMwU †hb f~uBqvevwoi eo `xwN n‡q hvq! AvwbKv †Nv‡ii g‡a¨ `v`yi †`qv bxj d«K, fvBqvi †`qv †gKvc e·, gv‡qi †`qv Mnbv, Rb¥w`‡b cvIqv K‡qKwU wcÖq Dcnvi, wcÖq †jLK‡`i eB; Ggb A‡bK wcÖq wcÖq wRwbm R‡ov Ki‡Z _v‡K| wKš‘ e¨vMwU †m¸‡jv wMj‡Z A¯^xKvi Ki‡Q Zxeªfv‡e|evB‡i cvwL WvK‡Q| cvwL‡`i GB WvK AvwbKvi Lye wcÖq, Av‡iv wcÖq GB evwoUv| evwoi Qv` Avi KvVev`vg Mv‡Qi mv‡_ Szj‡Z _vKv †`vjbv| Avi G evwoi gvbyl¸‡jv? Zviv wK Kg wcÖq?AvwbKv _g‡K `vuovq| gb e`‡j hvq| †dvb ev‡R| iæ`« †dvb w`‡q‡Q|AvwbKv †dvbwU wiwmf K‡i| e‡j—m¨wi iæ`ª, Avwg AvmwQ bv| Avgv‡K †c‡Z n‡j evev-gv‡K ivwR Kiv‡bvi †Póv K‡iv|Pvj †PviiwdKzj bvwRgGK`g nv‡Z bv‡Z aiv c‡o‡Q| ZvI Ggb gnvgvixi w`‡b!hLb c…w_exi me gvbyl Bqv bvdwm Bqv bvdwm Ki‡Q|wVK ZLb †nwKg †g¤^v‡ii N‡ii †g‡S †_‡K G‡K G‡K Îv‡Yi AvVv‡iv e¯Ív Pvj D×vi K‡i‡Q cywjk|evZv‡mi MwZ‡Z LeiUv Qwo‡q †M‡jv cy‡iv kvwšÍinvU MÖv‡g| †jvKRb †`uŠ‡o Avm‡Q †g¤^v‡ii evwo w`‡K|B‡Zvg‡a¨ Le‡ii KvMR I wUwfi †jv‡KivI P‡j G‡m‡Q| †KD †KD cy‡iv NUbv †gvevBj jvB‡f cÖPvi Ki‡Q|`y'Rb Kb‡÷ej †nwKg †Pviv‡K Miæi `wo w`‡q †eu‡a †i‡L‡Q| Kyievwbi Miæi g‡Zv MÖvgevmx Zv‡K AvMv‡Mvov †`L‡Q| †g¤^v‡ii mKj Kv‡Ri mnKvix gwR` †nwKg‡K Kv‡bgy‡L ej‡jv,'KBwQjvg ûRyi,GB MR‡ei wf‡Î Pzwi KB‡ib bv| ûb‡Qb Avgvi KZv?hvb,Gnb †R‡j wMqv cuBPv g‡ib|' gv_v wbPz K‡i jvwU‡gi g‡Zv wSg a‡i Av‡Q †nwKg| nVvr †m gwR‡`i UzwU †P‡c a‡i,'nvivwgi ev”Pv gwR`, ZzB Avgvi j‡M Bgyb wbgyKnvivwg Ki‡Z cviwj?'শিল্প সাহিত্য ০৩ বৃহস্পতিবার ৩রা বৈশাখ ১৪২৭, ১৬ই এপ্রিল ২০২০cuvwPj†mvgbv_ †ewbqvbbx mvnvi evwo‡Z cvovi G-`j G‡m ej‡jv, KvKz evwoi evB‡ii cuvwPj PzbKvg Kiv‡eb bv| ï‡b bbxevey AvgZv-AvgZv K‡i ej‡jb, †Kb ej‡Zv! gv‡b, wVK eyS‡Z cvijvg bv|- LyeB mnR KvKz| Avcwb bv Ki‡j Avgiv K‡i †`‡ev| kZ© ïay GKUvB| IB PzbKv‡gi Dci Avgv‡`i cvwU©i cÖwZwbwai bvg _vK‡e| mvg‡b wbe©vPb, eyS‡ZB cvi‡Qb| bbxevey †`L‡jb GB my‡hvM| ej‡jb, wVK Av‡Q| Z‡e kZ© n‡jv †fvU wg‡U hvIqvi ci Avevi PzbKvg K‡i cÖwZwbwai bvg gy‡Q w`‡Z n‡e| G-`j k‡Z© ivwR n‡q †Mj|iv‡Z cvovi we-`j G‡m GKB cÖ¯Íve ivL‡jv Ges bbxevey G-`j‡K hv e‡jwQ‡jb, we-`j‡K GKB K_v ej‡jb| we-`jI k‡Z© ivwR n‡q †Mj|G-`j h_vixwZ cuvwPj PzbKvg K‡i c‡ii w`b bvg wjL‡e e‡j P‡j †Mj| we-`j welqwU Rvb‡Z †c‡i G-`‡ji m‡½ Sv‡gjv euvwa‡q w`j Ges mgvav‡bi Rb¨ bbxeveyi Kv‡Q Avm‡jv| bbxevey `yB `‡ji w`‡K nvZ‡Rvo K‡i ej‡jb,- †Zvgiv mevB cvovi †Q‡j| †Zvgv‡`i mevB‡K Avwg †mœn Kwi| ZvB KvD‡K †div‡Z cvi‡ev bv e‡j IB K_v e‡jwQjvg| GLb ejwQ cuvwPjUv wb‡R‡`i g‡a¨ mgvb fv‡e fvM K‡i `‡ji cÖPvi Pvjv‡Z cv‡iv|bbxevey f`ª †jvK e‡jB cvovq cwiwPZ| †ek ¸wY gvbyl| GKevi ejv‡ZB cuvwPj e¨envi Ki‡Z w`‡”Qb GUvB wekvj e¨vcvi|`yÕ`jB bbxeveyi K_vq mvq w`‡q cuvwPjwU A‡a©K K‡i cvwU©i cÖPv‡ii Kv‡R e¨venvi Ki‡jv| †fvUce© wg‡U †Mj| `y-`jB cybivq G‡m cuvwP‡ji wb‡R‡`i e¨eüZ Ask cybivq mv`v PzbKvg K‡i w`‡q †Mj|GLb bbxevey is wgw¯¿ †W‡K cuvwPjwU‡K wb‡Ri g‡bi g‡Zv K‡i is Kiv‡Z-Kiv‡Z fve‡Qb Avm‡j cuvwPjwU Kvi ...শিল্প সাহিত্য ০২ বুধবার ২রা বৈশাখ ১৪২৭, ১৫ই এপ্রিল ২০২০Bb‡fjvct `¨ †b·U wm‡bgv†gvnv¤§` Rwmg†`vZjvi wmuwoi mv‡_ wZbZjvi wmuwoi SMov GLb Zz‡½| †KD Kv‡iv gyL †`‡L bv| G‡K A‡b¨i KvQ †_‡K `~‡i m‡i †M‡Q| ga¨LvbUv duvKv, ay‡jv Do‡Q| GLb PviZjvq †cŠQz‡Z n‡j jvd w`‡Z n‡e|jvdv‡bvi Af¨vm †bB ¸jRv‡ii| fvix kixi wb‡q GZUv jvdv‡bv hvq bv|K¨v‡givq †PvL †i‡L ¸jRvi †Ui cvq Zvi †fZ‡iI Ggb wekvj GKUv duvKv RvqMv| †mLv‡b KZ¸‡jv Ue, gvwUfwZ©| g„ZcÖvq K¨vKUvm, fvOv †MvjvcMvQ, g„Z iRbxMÜv ï‡q e‡m mgq cvi Ki‡Q U‡e U‡e|GZw`‡b ¸jRv‡ii KvQ †_‡K `~‡i m‡i †M‡Q eD-ev”Pv, eÜy-KwjM, GgbwK kÎyivI| duvKv n‡q †M‡Q, `yfvM n‡q †M‡Q Rxeb| weev`gvb wmuwoi g‡Zv|¸jRvi GLv‡b G‡mwQ‡jv wm‡bgv evbv‡Z| A_P †m PviZjvq †cŠQz‡Z cvi‡Q bv|AMZ¨v `vjvbwU †_‡K †b‡g G‡jv †m, Ab¨ `vjv‡b hv‡e|Awf‡bZv `xj gyn¤§‡`i evwo‡Z DB‡KÛ cvwU©| cv_y‡i Rwg‡Z Ryg‡¶Z, †Mvjvc †ejx wkgyj| †bwZ‡q cov eq¯‹v ayZzivI| ¸jRvi GKwU nvmœv Zz‡j wb‡Z †P‡qwQ‡jv, wKš‘ Zvi Av‡MB nvmœv‡nbv wb‡RB Zv‡K Zz‡j wb‡jv|nvmœv wKsev †nbvi †Mvjvwc wkdb kvox, nvZvKvUv eøvDR Avi wPKb ÷ª¨v‡ci eªv| 36 eqm wKsev ey‡Ki gvc Dfq †¶‡ÎB gvbvbmB| `y'‡Uv wmuwo G‡K Ac‡ii w`‡K G¸‡”Q| Zviv †U‡i‡mi w`‡K P‡j †Mj|†nbv h_v_©B iƒcmx| Sjg‡j| Zvi Rxe‡b Ab¨ wm‡bgv Av‡Q| ¸jRvi †mBme wm‡bgvq XyK‡Z PvB‡jI †nbv wd‡i ZvKv‡Z Pvq bv| Lvg bv Lyj‡j †hgb †fZ‡ii `ytmsev`wU cov nq bv| ¸jRvi LvgwU †Lv‡jwb, eis bv Ly‡j nv‡Z a‡i ivL‡Z fvj jvMwQ‡jv Zvi|LvgwU‡K ¯úk© K‡i cyjK cvq ¸jRvi| Pzgy Lvq| KPjvq| `jvB gjvB K‡i| 36 Av`k©| cuvP AvOz‡j Lvc †L‡q hvq|GKUv AvU©wdj¥ Ki‡ev Gevi| Bb‡fjvc| †Zvgv‡K Kv÷ Ki‡Z PvB|Avgv‡K Lv‡g fi‡Z PvI? Av‡M wb‡R †Zv †Xv‡Kv gkvB|†nbvi nvwm wibwSwb‡q ev‡R| g„`y g„`y Uzs Uvs kã nq|¸jRvi mixm…c nq, †`vZjvi j¨vwÛs‡q Kv‡iv cv‡qi AvIqvR †bB, wbf©‡q Lv‡g Xz‡K hvq †m|wdi‡Z wdi‡Z ivZ cÖvq †kl| †nbv †h wmuwo¸‡jv †e‡q Dc‡i DV‡Q †m¸‡jvi ga¨LvbUv duvKv| ¸jRv‡ii wmuwo‡ZI Ggb GKUv duvKv Av‡Q| A_P Zviv †hLv‡b wm‡bgv K‡iwQ‡jv †mB wmuwo¸‡jv †Kgb GKUv Av‡iKUvi Dc‡i Dey n‡q c‡o wQ‡jv| GË KvQvKvwQ!Avjv`v Avjv`v `iRvi Zvjvq cÖvq GKB mg‡q Pvwe †XvKvq Zviv| †h hvi Lv‡g Xz‡K hvq|duvKv wmuwo¸‡jv c‡o _v‡K †hgb wQ‡jv| Avi †mB k~b¨ RvqMvq K‡qKwU Ue c‡o _v‡K Ah‡Zœ, U‡e U‡e ïK‡bv †XuomMvQ|শিল্প সাহিত্য ০১ মঙ্গলবার ১লা বৈশাখ ১৪২৭, ১৪ই এপ্রিল ২০২০gwng †R‡M I‡VvKwei weUznVvr `xN© c_ †nu‡U †nu‡U hLb cv'Uv GKUz a‡i G‡m‡Q, gwn‡gi †m gyn~‡Z© †Lqvj nq †m †Kgb GKUv †Pbv A‡Pbvq †gkv‡bv RvqMvq P‡j G‡m‡Q| gvby‡li †Kvjvnj †bB, wiKkvi Nw›U, Mvwoi kã A_ev †Kv‡bv wKQzi MÜ, wKQyB Zvi †MvP‡i Avm‡Q bv †h‡bv|gwng Abygvb Kivi †Póv K‡i RvqMvUv †Kv_vq| Ggb wbS©ÅvU RvqMv ïay ¯^‡cœB †`Lv hvq, nVvr g‡b DuwK w`‡q hvq -Avwg ¯^cœ †`LwQ bv †Zv? cigyn~‡Z©B †n‡m I‡V| Ggb fvebv fvevi h‡_ó KviY †_‡K hvq| ¯^cœ‡K †hgb Abvqv‡mB †R‡MB AvwQ †f‡e †bqv hvq, †Zgb †R‡M †_‡KI DrKÉv ¯úk© K‡i hvq - G ¯^cœ bq‡Zv! gwng g‡b Kivi †Póv K‡i †Kv_vq hv‡”Q †m| wVK g‡b co‡Q bv| - wVK Av‡Q Amyweav bvB nuvU‡Z _vwK, g‡b c‡o hv‡e|'Ggb K‡iB AvRKvj fvebvi Af¨vm n‡q †M‡Q| wKš‘ MšÍe¨ g‡b Ki‡Z bv cvi‡j †Kvb w`‡K nvuU‡e †m| GKUz `vuovq Mv‡Qi Qvqvq, †Pv‡L c‡o `ywU m‡`¨vRvZ KzKz‡ii ev”Pv †e‡Nv‡i Nygvq GKUv Av‡iKUvi kix‡i kixi Wzwe‡q| - `y'‡Uv †K‡bv, Avi ev”Pv KB? gwng Gw`K Iw`K ZvKvq| evwK ev”Pv‡`i †Luv‡R| ev”Pv‡`i gv‡KI| kxZ kxZ jvM‡Q kix‡i - Avnv‡i ev”Pv¸‡jv wbðB iv‡Z Lye Kó †c‡q‡Q! - Av‡kcv‡k gqjvi fvMviI‡Zv †Pv‡L co‡Qbv, evwo N‡ii wPýI †bB| gwng AvU‡K c‡o GLv‡b| cvk w`‡q GKRb gvbyl P‡j hvq, wVK fv‡e ZvKv‡j †Pv‡L co‡Zv `yRb w`bgRyi GKUz `~‡i `uvwo‡q m¨v‡Ûj nxb gwn‡gi w`‡K Lye †KŠZznj wb‡q ZvwK‡q Av‡Q| nVvr GKwU †cvqvwZ weovj jvd w`‡q †b‡g Av‡m †Kv_v †_‡K †hb| †mw`‡K ZvwK‡q ev”Pv `y‡Uvi gv‡K cvIqv †M‡jv g‡b K‡i e‡m gwng| †Kv‡bv LUKv †bB, AmvgÄm¨I g‡b nq bv| gwng †`‡L wK my›`i AvKvk †P‡q Av‡Q Zvi w`‡K|nVvr †cUUv †gvPo w`‡q I‡V, †m `ªæZ evwo †divi iv¯Ív †Luv‡R, A_P g‡b c‡o bv| Gici `…k¨ cv‡ë mvg‡b a~a~ ïb¨Zv| †Pv‡L c‡o Kviv †hb †nu‡U hvq, ûm K‡i †cQb †_‡K D‡o hvq, Zvici Zvi cy‡iv kixiUvi `Lj wb‡q †bq| gwng †MvOvq- Avwg evwo hvgy| wb‡Ri Kv‡QB bvwjk K‡i Avwg evwo hvgy| ÿzav jvM‡Q| wKQy‡ZB g‡b K‡i DV‡Z cv‡i bv wKfv‡e evwo wdi‡e †m| GKUy AwbwðZ AvksKv wb‡q wb‡R‡K cÖ‡eva †`q -GUv ¯^cœ, GUv ¯^cœ| wbðB Avwg †R‡M DV‡ev...
No comments:
Post a Comment