Thursday, May 28, 2020

শিল্প সাহিত্য ৪৫

বৃহস্পতিবার ১৪ই জ্যৈষ্ঠ ১৪২৭, ২৮ই মে২০২০



কবিতা
সৈয়দ আসাদুজ্জামান সুহান
মানুষ হও

একদিন কবিতার চরণ গুলো সাপ হয়ে
বের হবে; তোমার মস্তিষ্কে দংশন করতে
সেদিনের জন্যে প্রস্তুত আছো তো, নাকি
শব্দের অপব্যবহারে আবারও নতজানু
হয়ে চোখে ধুলো দিবে আর নয়তো ফাঁকি।

আয়নাতে শুধুই নিজের চেহারা দেখেছো
ভেতরের রূপটা দেখার চেষ্টাই করোনি;
কখনো প্রশ্নও আসেনি, কেন বিবেক ভ্রষ্ট
চক্ষু লজ্জা ভুলে চললে আপন খেয়ালে
ক্রমাগত পঁচে গলে নিজেকে করেছো নষ্ট।

আচ্ছা বাঁচবে কতদিন, শত হাজার বছর?
এতো দাম্ভিকতা; আছে নাকি অমৃত সুধা!
তবে কেন জাহির করো মূর্খের মত অহম
স্তব্ধ হও, শুদ্ধ জ্ঞানে শাপমোচন করে নাও
নয়তো আস্তাকুঁড়ে যাবে ফুরিয়ে গেলে দম।

পলিয়ার ওয়াহিদ
মোকাবিলা

ভিটামিন ডি-এর মতো হাসুন
শরীরে রোদ মেখে করোনা তাড়ান
হাত-পা গুটিয়ে বসে থেকে লাভ কি?
মোকাবিলা ছাড়া মুক্তি নাই

Facing

To laugh like Vitamin-D
To sweep Corona to smear with the sun in your body
What is benefit in sitting to close down your hand-feet?
Have any final release without facing?

মাহমুদ হাসান আবির
ডিমপোঁচ হাসি

রাতের মৃত্যু হলে হরিণ শাবকেরা হেঁসে ওঠে। ভেজা মাটিতে বাবলা ঝোঁপের গ্রাফিতি বিলুপ্ত হয়ে যায়, পায়ে হাঁটা পথে যাদেরকে দেখা যেতো। চাঁদর গায়ে মৌচাকে বসে থাকা লার্ভাদের অসহায় লাগে ভীষণ, আত্মহত্যার গায়ে কাঁটা জড়ানো বলে।
অভিশাপেদের ঘুম ভেঙ্গে গেলে, গর্তে লুকায় দিন। ডিম পোঁচ হাসিতে জড়িয়ে আসে শহর, আমরা ভালো থাকি সকলে।          

অনুপম মন্ডল
বাসকলতার পাশে

.
যেভাবে ভোরের বাতাস, গানের বিষণ্ণ কলিটিকে, ছুঁয়ে যায়, উন্মাদনায়তাঁর মতো করে, সন্ধ্যাতারার মতো ভীষণ নিঃসঙ্গ এই শেষ পদ, সে কুড়িয়ে নিচ্ছে, মলিন আঁচলে
.
বুড়ো বটের ঝুরি একে বেঁকে, ওই তালপুকুরের আরও গভীরে নেমেছে। পাড়ে তেলকুচো লতা। ঘন গাঢ় তার ডাঁটার আড়াল থেকে ব্যাঙ ডাকে। গম্ভীরনাদী। জ্যোৎস্নার ছায়ার ভেতরে, পিঁপড়ের বাসার ওপর হয়তো বা ঝুঁকে পড়ে তারাঝুমকো গাছটি।
.
অস্পষ্ট আলোর নিচে বয়ে যাওয়া, অই সাঁঝবেলা, থোকা থোকা আঁধার ভরা পাথরকুঁচি গাছ থেকে মুছে নিচ্ছে, অস্তায়মান স্বরাভাষআমি, তার ক্লান্ত মুখের পরে স্তিমিত দীপখানি তুলে ধরিদেখি, বকুল-বীথির তলে কার ফেলে যাওয়া ডালি, ভরে আছে, সুরের অঙ্কুরে
.
সন্ধ্যাতারা, তোমার আঁচলের খুঁট খুলে, একটি দুটি করে আলোর-বাকল খসে পড়ে, রাত্রির পরে। কোথাও ওই বনলতিকার শোভা, ঢেকে দিয়ে যাচ্ছে দূরের রাগমালা। নিঃসঙ্গ কেতকীর মতো। যেন, তাঁর আঁখির সম্মুখে, কোন কারিগর, গেঁথে চলেছে, পুরবীর রেখা দিয়ে অনির্দেশ্য বাণীর আভাস।
.
প্রখর রৌদ্রে ভিজে যাওয়া পঙক্তিগুলো, ঝরা শেফালীর মতো ঝরে গেছে, পথের দুপাশে। দূরের গাছপালার ভেতর দিয়ে কারো অবনত মুখআর, সিঁদুরে মেঘের অইপারে সার-বাঁধা হিজলের মাথা, ঘুমে ঢলে পড়েযেনএই বন্ধন, অনাবৃত মধ্যাহ্নের ভেতর নীরবে, ক্রমশ শিথিল হয়ে আসছে। অনালোকিত ভৈরবীর বিভূষায়।

নাজমুন নাহার নাসরিন
নিখুঁত বীভৎস

তুমি যে নেড়িকুত্তা আগে থেকে বুঝবো কি করে? কাছে এসে তবে বুঝলাম। শরীরে ক্ষত নিয়ে গোমড়ামুখে ফিরলাম।

তুমি যে কামড়াতে পারো বিষাক্ত দাঁত দিয়ে; পা দিয়ে হেছেড়ে ঝরাতে পারো রক্ত এমন কি চামড়া এক মুখে গাপ করে গিলতে পারো প্রেম। এ তো আমি দেখলাম অনুভব হারিয়ে।

তুমি আরো পারো নষ্ট করতে সাজানো বাগান, না ফোটা ফুলের কলি গুলো মুছে দিতে।
রঙ্গিন রাত্রিকে করতে পারো ব্যথার কল্লোল। দুমড়ে দিতে পারো কিশোরীর গজে ওঠা সদ্য জামরুল।

চোখে তোমার প্রেম দেখিনি, আবেগে দেখিনি ভালোবাসার।

শহরের নিষিদ্ধ বার থেকে প্রতি অন্ধকার বাড়ি ফেরা রূপ দাসীদের সাথে শরীর নিয়ে খেলা মদ খেয়ে মাতলামো সব তোমার রোজকার অভ্যাস। একটু একটু করে সব খেলে উত্তেজক মাংস, উপোসী যৌনাঙ্গ সবশেষ ঘাড় মটকে দিলে।

তুমি দাবানল, কামখোর একটা। প্রেম বোঝনা শুধু বোঝো খেলা খেলা।

নিভু নিভু আলো অন্ধকারে যেমন ঢলে গন্ধহীন কাশফুল হয়ে যুগলবন্দী থেকে বঞ্চিত হলে।।

অণুগল্প
অপারেশন
হীরক বন্দ্যোপাধ্যায়

কর্পোরেশনের লরি বস্তিবাসীকে নিয়ে ফেলে দিল ধাপায়। কেউ জানলো না। ভোরবেলা প্রথম সূর্যের আলোয় দেখা গেল একটা বাচ্চা হামাগুড়ি দিয়ে বেরিয়ে আসছে...

ভিক্ষা
প্রণবকুমার চক্রবর্তী 

একটা সাহিত্যের আড্ডয় যাচ্ছিলাম সঙ্গে আরোও  দু"জন সাহিত্যিক বন্ধু বাস থেকে "পান্থনিবাসে" নেমে চা খাচ্ছি আর নিজেদের মধ্যে সামাজিক ন্যায় অন্যায় বোধ নিয়ে আলোচনা করছি হঠাৎ , গুটি কয়েক ভিখারী এসে একে একে হাত পাতলো। 

এই ভাগো তো এখান থেকে কিছু  হবেনা বলে রমেন আর ইয়াছিন ওদের হটিয়ে দিলো

আমি ওই ফাঁকে পাশের দোকান থেকে এক প্যাকেট সিগারেট আর ফেরৎ খুচরো "টা টাকা হাতে নিয়ে ওখানে এসে দাঁড়াতেই , বাচ্চা কোলে করে এক ভিখারিনী এসে হাত পাতলো বললো - বাবু ? গতকাল থেকে বাচ্চাটা কিছুই খায়নি কিছু দাও না গো তোমার মঙ্গল হবে

দেখে খুব খারাপ লাগলো হাতে ধরে থাকা খুচরো টাকা "টা ওর হাতে দিতেই , সেটা দেখলো তারপর, পাঁচ টাকার কয়েনটা আমার হাতে ফিরিয়ে দিয়ে বললো - বাবুতোমার মঙ্গল হোক কিন্তু , তোমার বোধহয় একটি ভুল হয়েছে বেশি দিয়ে ফেলেছো ভিখারীকে কেউ এতো বেশি ভিক্ষে দেয় না
আমি কিছু বলতে যাচ্ছিলাম পারলাম না আমাকে সেই সুযোগ না দিয়ে রাস্তা পেরিয়ে অন্য পাশে চলে গেলো

পাঠ অনুভূতি

রাতুলের রাত রাতুলের দিন : মুহাম্মাদ জাফর ইকবাল   
কামরান সরকার

বইটির ঘটনা প্রথম থেকেই অনেকটা অবাস্তব মনে হবে। রাতুলের লাফিয়ে জাহাযে উঠা থেকে শুরু করে অনেকটাই নায়কের ওভার একটিং হয়েছ। সবারই বইটা পড়ে তাই মনে হবে।

কিন্তু বইটি আমার অসম্ভব ভালো লেগেছে। নিজেকে নায়ক হিসেবে ভেবে পড়তে লাগলে অন্য রকম ভালোলাগা কাজ করে। বইটি এডভেঞ্চার উপন্যাস হিসেবে খুবি পাঠ-দায়ক। বইটিটে লেখক তার ধারণা গল্পের মাধ্যমে ধীরে ধীরে সুন্দর ভাবে প্রকাশ করেছেন। পৃথিবীটা যে কম্পিটিশনের উপর টিকে আছে সেইটা প্রমাণ করেছেন কিন্তু পৃথিবীতে টিকেতে হলে একে অপরের সাথে মিলেমিশে থাকতে হবে সেইটা দেখিয়ে দিয়েছেন।

গল্পে লেখক কিছু চরিত্র তুলে এনেছেন যেই চরিত্র গুলোর সাথে আমারা পরিচিত কিন্তু তাদের ভিতরের মানসিকতা আমাদের দৃষ্টির অগোচোরে ।  সেই চরিত্র গুলা লেখক আমাদের সামনে বাস্তবের মত ফুটিয়ে তুলেছেন। গল্পটাতে আমার পথশিশুর সাথে সবার আচরণটা আমাদের বাস্তব জীবনের প্রতিছবি ফুটিয়ে তুলেছে। বইটি প্রকাশ করেছে পার্ল পাবলিকেশন।
আমি উপন্যাসটি অনেক বার পরেছি। যত বার পড়েছি খুব ভালো লেগেছে। পড়বেন বইটি অবশ্যই ভালো লাগবে। ধন্যবাদ।

ভাষান্তরকায়েস সৈয়দ
মূল: জঁ ককতো

সুন্দর

ঝাঁকুনি দিয়ে পান করি ঠাণ্ডা জল
ছুরির আচমকা ধাক্কা
গ্রহণ করি অন্য পানীয়
ওহ গরীয়ান অশ্বারোহীদের শোভাযাত্রা
শরীর জুড়ে ছোটে রাতে

ছিটা ছিটা জল
বেগোনিয়া ফুলেদের ভর
কেউ বলতে পারে ঘাসের মধ্যে আছে
চিংড়ির ভেজা টুকরো

সমুদ্রের গভীরে
একটি সাদা গাছে
দুঃখের সাথে গান গায় দুটি মাছ
কিন্তু তাদের গান দুঃখজনক নয়

কখনোই পাবে না সমুদ্রের দেবী
পোনা মাছের দুর্দান্ত মিছির

2 comments:

  1. নাজমুন নাহার নাসরিনের লেখাটা ভালো লাগলো

    ReplyDelete

সর্বশেষ

শিল্প সাহিত্য ১৩৩

সোমবার   ৯ই ভাদ্র ১৪২৭ , ২৪ই আগষ্ট ২০২০   কবিতা বিনয় কর্মকার ছবির গল্প   ভাতের ছবি আঁকতেই, ছিটকে পড়ে কালির দোয়াত! লালরঙা স্রোত, সাঁতারকাট...

সর্বাধিক