মঙ্গলবার ১২ই জ্যৈষ্ঠ ১৪২৭, ২৬ই মে ২০২০
দুর্গাপদ চট্টোপাধ্যায়বুবুন একটি নদীর নামযেন শীতলপাটির মতো ঘুম পেতে শুয়ে আছে কেউ।আর দয়ালু নৌকার জলে বেওয়ারিশ জাগাগুলিহেঁটে গেছে নদীদেহ হয়ে নিভৃত জলের খোঁজে।চিলেকোঠা ছুঁই ছুঁই চাঁদ। আর পদাবলী জ্যোৎস্নায়বাদামি টিলার মতো যাবতীয় উপকথাগভীর অসুখ ছুঁয়ে মিশে গ্যাছে লাজুক বাতাসে।যেন জল থেকে চুরি করা ঢেউ।আর ভীষণ নরম কোন নদীটির গভীরতা ছুঁয়েমাছেদের ডুব জলে ডুবে গ্যাছে আকণ্ঠ আখর,আর মুঠোবন্দী চিঠিটির ডুব ডুব জলকথা-লেখা আছে খামের গোপনে।এইসব - একদিন - তারপর নৌকা ভাসানোকোন বদর বদর রাতে ভেসে যাবে বুবুনের ঘুমনিষিক্ত বৃষ্টির জলে।শরীরের চরাচর ধূুমজ্বরে চলে যাবেচুপকথা পার হয়ে রূপকথা ঠোঁটের গোপনে।একটু সময় আমাকে দিওরাজলক্ষ্মীমনুষ্যচমকে উঠে বাজপাখি অস্বস্থির সঙ্গে চারিদিকে তাকায়। আঃ শয়তানে ঠেলে নিয়ে যায় নৌকা দাঁড় টানে শোধখোর। লজ্জায় বিলুপ্ত হয় বাজপাখি।রওশন রুবীআমাকেই খোঁজ অবশেষেআমাকে আহত করে এমন তীরের চেয়ে একখন্ড মেঘ দাও ডুবি, আমাকে পোড়ায় শূন্যতা,খাঁচায় ফেরত পাখি ডানায়মেখে যায় কাল সকালের রোদ,আমাকে মাড়িয়ে যাবার আগে জেনে নাও এ মাটির ইতিহাস,জেনে নাও শ্যাওলারা কতকাল আগে চুমুকে নিয়েছে স্বাদ,আর কতো বিস্বাদের তরী ভাসানে যাবে তার দেশেআমাকে আহত করেআমাকেই খোঁজ অবশেষে।আরণ্যক টিটোবন্দীর জবানমাননীয়,ইতিহাসের অনেক মহানের হাত রক্তে রঞ্জিত...সে হিসাবেঘোষিত অপরাধ(!) আমারলঘু...হতে পারেএকদিনহব আমিপ্রদীপের ফেরিঅলাকিংবা পথহারা নাবিকের দিশাময় বাতিঘরকিংবা আলোর একাডেমী...যার মাঝেপ্রদীপের আলোর নীচের অন্ধকার নিয়ে গবেষণা করেআচার্য্য হবেন আগামীর সন্তানেরা,পৃথিবীর মঙ্গলযাত্রায়...মাননীয়,সম্ভাবনার মৃত্যু ঘটানোও অপরাধ!যার কারণেওএকদিন কাঠগড়া প্রস্তুত হতে পারে...অনির্বাণ ঘোষপ্রেমিকের প্রতিপুলিশ যখন মেয়েটিকে ধরে নিয়ে গেলো,আনন্দে চোখ বন্ধ করে হাসছিলো সেশরীরে যত গহনা ছিল; সব এক এক করে খুলে ফেলেছিলো রাস্তার ধারে।হয়তো ধীরে ধীরে তাতে ময়লা পড়বেদূষণের কালো আস্তরণ মিশিয়ে দেবে আবর্জনাদের সাথে,মুষলধারে বৃষ্টি পড়লে, কিংবা তীব্র রোদ উঠলেপথের ধারে ভিড় জমবে।কথা-কাটাকাটিতে জড়িয়ে পড়বে যত অচেনা মুখের দল...এসব খবর শুনে হাঁপাতে হাঁপাতে ছুটে আসবে তুমি,শক্ত দু'হাতে ভিড় সরিয়ে যেই না সামনে এসে দাঁড়াবে-বিস্ময়ে ছিটকে যাবে তুমিগহনাগুলোও তখন মুখ চাওয়া-চাওয়ি করছে একে অপরেরআর বলছে- ‘এতো ভালোবাসা আগে তো দেখিনি।’ভাষান্তর: কায়েস সৈয়দমূল: : জঁ ককতোঘুমন্ত বন্ধুর প্রতিতোমার হাত ছড়ানো চাদরেযেখানে আমার মৃত পাতারাযেভাবে আমার শরৎ ভালোবেসে ছিলো তোমার বসন্ত!স্পন্দিত স্মৃতির বাতাসে একটি দুয়ারআঘাত করে, বন্ধ করে দেয় সবকিছুতোমাকে ছেড়েছি, স্বার্থপর, তোমার মিথ্যেঘুমযেখানে স্বপ্ন ধ্বংস করেছে তোমার সমস্ত চিহ্নকিন্তু তুমি বিশ্বাস করেছো তাদের মধ্যেই,দুঃখজনক হীনতাএকজন স্বপ্নদর্শীর জগতের অসত্য সম্পর্কেএবং যেভাবে তুমি এই অন্যলোক হয়ে উঠলেতোমার সঠিক গঠন থেকে বিমূর্ততুমি ছিলে পাথর, প্রেমিকের কন্য কষ্টকরপুষে রাখা নিছক নামেন স্মৃতিসজাগ, অবিচল, করেছি চূড়ান্ত আহ্বাণপরিচিত সব জায়গায় প্রতি একবারএরকম শৌখিন প্রত্যাবর্তন মোটেও নাড়া দেয়না আমায়এখানে আমার হাত দিয়েআমারই মুখে করেছি রক্তমোক্ষক কাচপ্রয়োগএবং ফিরে এসেছি আমি এমন মৃত যাত্রা থেকেপুনরায় সন্ধান করা বেদনারতোমার দুর্দান্ত ও অবারিত হাত, সীসার চোখআমার প্রেমিকার মুখে রাত্রিআমরা ছিলাম ঐ দু’মাথার ঈগলের মতোকিঙবা দু’মুখো জেনাস দেবতার মতোশ্যামদেশীয় স্বাধীন জমজ শিশুর মতোকিঙবা জায়গাতে সেলাই করা বইয়ের মতোআমরা ছিলাম প্রেমখেলা থেকে তৈরী আনন্দ নামেরপশুপ্রকৃতি, উসকোখুসকো কোকড়া চুলের গিজগিজ,সে কেঁদেছিলো এবংতার নিজের বলি হতে নিজেই উন্মাদধীরে ধীরে মরে যাওয়া আত্মহুতি দিয়েউদ্বিগ্ন প্রেমীদের হামাগুড়ির মধ্য দিয়েতবে হতাশার বন্ধুত্বের এককগুলো কী?গোলকধাঁধাঁটা ই বা কীযেখানে আমাদের সমস্ত সতর্কতাঘুমের সাথে পুনরায় সংযোগ করাতারপর, কি খুঁজে পেয়েছি আমি এবঙ কি হবে?আমি ঘুমাই, ঘুমোতে না পারা বাকী ঘুমকিন্তু বিশ্রাম নিলে আমার জানা হয়স্বপ্ন থেকে মুক্ত হতে পারি আমিযার মাধ্যমে আমি হারাচ্ছি তোমায়ও ঈশ্বর, অবারিত মুখটি কতো সুন্দর!যেখানে ঘুম পুরানো মৃত্যুর অনুলিপিসুবাসিত করে, উজ্জ্বল করে, স্বর্ণের মধ্যে আবদ্ধমিশরের ঘুমন্তদের অনুগ্রহ রঙ করে পুনরায়কিন্তু তোমাকে দেখলেই মুখোশ পড়েছিতোমার নিজের চামরা দিয়েআমাদের সকল করিতকর্মারা অনুভূতিশূন্যতোমার ছায়ার অবশিষ্টাংশ সরু হয়ে ঝরেলুকিয়ে পড়ে হৃদয়ের মাঝেঅনুপম বন্ধুত্ব এই পৃথিবীর হয় না কখনোসব সময় খুঁজে পাওয়া যা আশ্চর্যছুঁড়ে দেওয়া হয় ধ্বংসের অপূরণীয় গর্তপাওয়া গেলো সব বন্ধুত্ব, প্রেমময় সব ছদ্মবেশগণনা করা হয় না আর সময় আমাদের আশ্রমেসময় কী আর দিন কী?যখন প্রেম আসে নিগূঢ়তার পরিবর্তেদ্রুত দোষারোপ করে যাই আমরা যেখানেই পারিদৌড়তে থাকি আমি, আর তুমি অন্য উপায়েকোথায় যাচ্ছো তুমি, আমিই বা কোথায়?হায়রে, আমরা ক্যাথের কোনো দৈত্য নইনই হিন্দু আকাশের বংশীবাদকচরম পরিণতির ক্রন্দনের জট তোমারআহ...প্রেমিক...প্রেমিকা...আনন্দেন ব্যথা...তুমি পাথরে খোদাই করা কিম্ভুতকিমাকার গারগোয়েলমধ্যযুগীয় মন্দিরের উপর ঘুপসিআমরা হৃদয দিয়ে গ্রন্থিবদ্ধ একটি দেহ( এভাবে দেহিিট আত্মবিশ্বাসে প্রদর্শিত )আমাদের একমাত্র যন্ত্রণাদায়ক নরকএমন একটি নরকযেখানে জ্বলে না কোনো অগ্নিশিখাঅপ্রত্যাশিতভাবে মরে যাওয়াদের জন্যএকটি শূন্যস্থানকাছাকাছি শেখা,দেখেছি তোমার মন্দিরে করা আঘাতএবং দেখাই যে তুমি রক্তের ভাবনাতোমার রক্ত সেই লাল সমুদ্রযেখানে আমার আত্মার বহরনোঙর দিয়ে বাঁধা, তুমি তাকাচ্ছো না সেই প্লাবনেযদিও আমি পুনরায় সংগ্রহ করেছি ইতিহাসের বরফতুমি সেখানে গিয়েছোযেখানে দেখেছিলে স্বপ্ন তোমারচকচকে সমুদ্রের উপর সূর্যের আলো জ্বলছেসিলিং এ প্রতিফলিত, ঠাণ্ডাতোমার অভ্যন্তরীণ দৃষ্টি তা ই দেখতে পেতোনাড়া দিতে হয়েছিলো তোমার বাহুতোমাকে জাগাতে এবং ধ্বংস করতে একেবারেগঠিত হয় পরিপূর্ণতা নিদ্রাকারীর প্রশান্তি থেকেচুপ করে বসে রইলাম তোমাকে দেখে, তোমার হাঁটুকনুইর উপর, বাতাসে চিবুক, আমি পাইনি তোমায়ঝালাই করেনি আমায় কিছুইতোমার যান্ত্রিক শরীরের প্রতিস্বপ্ন দেখেছি আমি, স্বপ্ন দেখেছো তুমিবৃত্তাকার হয়ে গেছে সবকিছুউভয় রক্ত এবং নক্ষত্র যুক্তযখন এই সময়টি লাভ করেছিলো স্থলএবংনিজেদের ধ্বংস করেছিলো জাতিগত যুদ্ধেতোমার কাপড়ের ভাঁজগুলো দুলতে থাকেঅলসভাবেছোট্ট ভাঁজ যেখানে চলাচর করে ছায়াযেখানে সেই দেহগুলির মতো ধ্বংসযজ্ঞপরিবর্তিত হয়েছে সবাইকে ভয় দেখানোর জন্যএবং সেখানে বিছানা থেকে দূরে একটিমাত্র জুতোমরে যাওয়ার মধ্য দিয়ে ছিলো একটি ছোট্ট জীবনকীভাবে এ ধরনের ব্যাধিগুলো দেখায়-আহত তুমি!নিদ্রকারী এই কলহের মেরামত করতে পারে কি?এটা প্রসারিত করেছে তোমাকে, অনুলিপি করেছে তোমার পথএর মাধ্যমে বুঝতে পেরেছিলাম আমি তোমাকেএকজন যে কিনা তোমার অন্তর্বাসের দিকে তাকিয়েই বলতে পারেএটি চালাতে যাচ্ছিলো বন্দুকএবং কখন আমাদের আত্মহত্যা বা চুরিএকটি ভিলাকে পরিণত করেছে সমাধিতেশোষণ করে ভয়,তোমার শান্ত মুখটি বাকী ছিলো শুধুধ্বংসের অগ্রদূতের জন্য একটি আশ্রয়এখন চলেছি আমার পথে স্বপ্নের সাথে জড়িয়েযখন আমি গাইলাম সন্ন্যাসীর সুরআমার জীবনব্যাপ্তি চুক্তি করেযখন দেখা পায় রৌদ্রেরদীর্ঘায়িত করতে আমার ছায়ার তীর্যক হয়ে পড়াহাতে আসা এই ছায়ার সব জানতাম আমি-যা ছিলো আমারতার চলন বলন সবই জানতাম আমিএবংসন্ধ্যায় মরুভূমির বালিতে আমার আগে সেখানেপ্রসারিত ও বিমর্ষ হয় আমার ছায়াআমার শরীরের দুর্দশাকে এখন দোষ দেয় ছায়াকিন্তু কী পূরণ করতে পারে এর অভাবপেছনে ফেলে দিতে পারেছায়াযদিনা সূর্য বা চাঁদ ওঠে আলো নিয়ে?ঝাঁঝরা করা আকাশ অতিপ্রাকৃত তারায়মানবিক ঈগলের শংকার সাথেআত্ম-ধ্বংসাত্মক যুদ্ধে পরিণত করবো না তোমাকেকিন্তু সূর্যের আলো তোমার ক্ষতি করুক পুরোপুরি
No comments:
Post a Comment