রবিবার ১৭ই জ্যৈষ্ঠ ১৪২৭, ৩১ই মে২০২০
ক বি তা
সরকার অরুণ কুমার
ঠেলা জাহাজের খালাসী
প্রস্তুত হও সাহসী বীর। বহিছে বিপন্ন সময়
স্বার্থে ভরা দুনিয়া, মনে শুধু কলহের সুর
আদর্শের খুঁটিগুলো স্বার্থের ধাক্কায় নড়বর,
শয়তানের অশুভ মন্ত্র আদমেরে ফেলে মৃত্যুর ফাঁদে।
খোঁড়া পা খানায় পড়ে বেশী। ঘরকাটা জীবন শুমারি
থাবায় থাবায় তুলে নিচ্ছে আয়ু
সত্যটা বললেই ক্ষিপ্ত হন ধর্মরাজ!
অশুভ নসীব, খানাখন্দে ভরা জীবনে ক্ষণেক বিশ্রাম
অনর্থক মিথ্যা ভাষণ, আগুনের খাপরা নিয়ে আমরা চিরকাল
খারিজ হয়েছি দোটানার অন্ধকারে।
গর্দভের পিঠে যেন খারে দজ্জাল
জীবনের খেয়ানদীতে আমরা
ঠেলা জাহাজের খালাসী
নাকাল হতে হয় প্রভুদের কাছে।
রফিকুল নাজিম
অপ্রেমিক
তোমার চোখের তারায় কতটুকুন মায়া ঘুমায়,
কতটুকুন দুষ্টু আর্তি খেলা করে; ঠিকই মাপতে পারি।
তোমার ঠোঁটের কোণে কতটুকুন বিদ্যুৎ চমকায়
কতটুকুন নিষিদ্ধ গন্ধম ঝুলে থাকে; জানি গো নারী।
তোমার বুকের তিলক দু'টো কতটুকুন ওম খুঁজে
কতটুকুন উষ্ণতায় সুখের বিলবোর্ডে তৃপ্তির রঙ ছিটায়?
কতটুকুন আদরে তোমার এলোচুল হাওয়ায় উড়ে
কতটুকুন রাগে রক্তিম রঙে কানে রক্তজবা সাজায়?
তোমার গোপনীয় ভ‚মির কতটুকুন উর্বর- চাষযোগ্য
কতটুকুন ঘামে বীজ থেকে চারা হয়? সব হিসেবই রাখি,
কোন ঋতুতে কোন ফুল ফুটে; কোন পাখি গায়
কত ডেসিবল শব্দে হুংকারে মেলো তোমার আঁখি...
আহা! অপ্রেমিক আমি-তোমার আকাশে দেইনি উঁকি
জানি না-কতটুকুন কার্বন লুটোপুটি খায় যখনতখন,
কতটুকুন অভিমানে এসিড বৃষ্টিতে পোড়ে তোমার মন
কখনো খুঁজিনি- তোমার হৃদয়ে কেন এতো রক্তক্ষরণ?
সাজ্জাদ সাঈফ
তমা সিরিজ: স্বরলিপি
ট্রেনে চেপে শহরের বুকে নেমে এলো
দূর গঞ্জের মেঘ-
এইখানে ফোনের টাওয়ার, হিম বাতাসে মাথা দোলায়
নতুন ধানের গন্ধে দাড়িয়াবান্ধা খেলে, হাওয়া তার কানে কানে
জোনাকের পাঠশালা খোলে, রমরম করে হারানো চিঠির সুর।
নাও তমা, হেরফের;
তোমার দিকে নগরজীবন বাড়িয়ে দেবে শিম-ফুল;
মথুরা-বাঁশরী ঘিরে থাকবে, ওজনোস্তর;
নাও দু'হাত ভরে, অতল প্রেমের নিচে চাপা পড়া
সভ্য ও সভ্যতার গান, স্বরলিপি তার!
শুভ্র সরখেল
প্রলাপ
রহমান চাচা প্রায়ই বলতেন
দীর্ঘ জীবন সে চায় না।
মানুষের মন সে বুঝতে পারে না---
নিজেকে বুঝতে শেখে নাই---
ডাকসু, চলচিত্র, রিয়ালিটি শো, মানব বন্ধন, ক্যাম্পাস ইত্যাদি
কিংবা
আরও অনেক ইত্যাদি---
সে কিছুই বুঝতে চায় নি জীবনে ।
রহমান চাচা প্রায়ই বলতেন
বাঁচতে সে চায় না ।
গাছের ছায়া সে বুঝতে চায় না ---
দালানের উচ্চতা সে ধরতে জানে না ---
শৈশব, ইস্কুল পালানো, ছেঁড়া ঘুড়ি, রাস্তায় বলাকা, এলাকার সেলুন ইত্যাদি
কিংবা
আরও অনেক ইত্যাদি ----
সে কিছুই পায় নি একদম নিজের মতো করে ।
রহমান চাচা প্রায়ই বলতেন
মৃত্যু খুব আপন তার কাছে ।
রেল লাইনের অংক সে বুঝত না ----
বাগধারার শব্দ সে জানতো না ----
জমির কেস, জুম্মার নামাজ, সন্ধ্যায় উলুধ্বনি, পুলিশের গন্ধ, ককটেলের রঙ ইত্যাদি
কিংবা
আরও অনেক ইত্যাদি ----
সে কিছুই চিনতো না ভালো করে ।
রহমান চাচা প্রায়ই বলতেন
আবার বাঁচতে হবে আরেক সন্ধ্যা তোদের সাথে ?
অনেক ইত্যাদি নিয়ে কাটাতে হবে আরেকটি সন্ধ্যা ?
কিংবা
আরও অনেক ইত্যাদি
RukaiyaPakhy
“Ohh Love!”
Someday,
my dear!
Someday
I'll be paralyzed with happiness.
Holding
a glass of Red Wine in left
I'll
chain you with magic.
You'll
be traumatized for a while!
Seeing
you puzzled-
I'll
smile,
Kiss
on forehead,
Seize
your hands for saying-
'YOU'RE
UNDER ARREST!’'
ভাষান্তর: কায়েস সৈয়দ
মূল: জঁ ককতো
দেবদূত অর্টোবাইস
১.
দেবদূত অর্টোবাইস পদক্ষেপে
জলযুক্ত রেশমী ডানায়
আঘাত করে আমায়
সতেজ করেস্মৃতি
বদমাশ, নিশ্চল
ভেঙে যাওয়া আকিক পাথরের উপর
একাকি আমার সাথে, গাধা, তোমার অতিপ্রাকৃতো পালানো
২.
দেবদূত অর্টোবাইস
অবিশ্বাস্য বর্বরতায়
ঝাঁপিয়ে পড়েআমার উপর
দোহাই, এতো জোরে ঝাঁপ দিও না
বদমাশ সাথী, লম্বা ফুলের
দৈহিক উচ্চতা
রেখে দিয়েছো তুমি আমায়
খুব খারাপ আচরণ
টেক্কা ধরলাম আমি, দেখছো?
কী আছে তোমার?
৩.
দেবদূত অর্টোবাইস
ধাক্কা দেয় আমায়
আর আপনি, প্রভু যীশু, কৃপা
তুলে নাও আমায়, তোমার জোরালো হাঁটুর কোণে
উঠিয়ে নাও আমায়
নিছক আনন্দ, বৃদ্ধাঙুল
খুলে দাও দড়ি
আমি মরি
৪.
দেবদূত অর্টোবাইস ও দেবদূত সেজেন্ট
নিহত হয় যুদ্ধে- কি আশ্চর্যজনক
নামকেলি
কাকতাড়ুয়া চরিত্র
ইশারায় ভয় নেই যার কোনো
স্বর্গীয় চেরি গাছগুলোতে চেরিগুলি
গির্জার ভাঁজ-দরজার নিচে
হ্যাঁ সম্মতির ইশারায় অভ্যস্ত
৫.
আমার অভিভাবক দেবদূত, অর্টোবাইস
আমি তোমাকে পাহারা দেই
আমি তোমাকে আঘাত করি
আমি তোমাকে ভেঙে ফেলি
আমি তোমার পাহারা বদলাই
প্রতি ঘণ্টায়
পাহারায়, গ্রীষ্ম!
চ্যালেঞ্জ করছি তোমাকে
যদি তুমি মানুষ হও
মেনে নাও তোমার সৌন্দর্য
সাদা সীসার দেবদূত ধরা পড়ে একটি ছবিতে
ম্যাগনেসিয়ামের একটি বিস্ফোরণ দ্বারা
পাঠ অনুভূতি
ময়ূরাক্ষী : হুমায়ুন আহমেদ
কামরান সরকার
ময়ূরাক্ষী নদীকে একবারি আমি স্বপ্নে দেখি। নদীটা আমার মনের ভেতর পুরোপুরি গাথা হয়ে যাই।
ময়ূরাক্ষী হুমায়ুন আহমেদ স্যার এর হিমু সিরিজের প্রথম বই। বইটিতে হিমুর রহস্যময় চরিত্রটা এমন ভাবে উপস্থাপন করেছেন যে, এমন পাগল একটা চরিত্র কিন্তু সবাই ভালোবেসে ফেলবে। হিমুর নদীটা তার পছন্দ তাই নদীটাও হিমু তার পছন্দের মানুষদের দিতে চায়। উপন্যাসের হিমুর বন্ধবী রূপাকে নদীর নাম দেয়, হিমুর ফুপাতো বোন রিনকি ও তার জামাইকে নদীটি ব্যাবহার করতে দেয়।
উপন্যাসে হিমুর আশেপাশের চরিত্র এবং তাদের সাথে হিমুর কথা-বার্তা, হিমুর ভাবনা চিন্তা ও হিমুর বাবার উপদেশ দিয়ে লেখক মহাপুরুষের কিছু গুণ প্রকাশ করেছেন। হিমুর বাবার উপদেশ মহাপুরুষেরা মায়ার বাহিরে থাকবে, সম্পদের চিন্তা থাকলে কষ্ট থাকবে। উপন্যাসের মজিদকে দিয়ে নির্লিপ্ততার উদাহরণ দিয়েছেন। মানুষকে বিভ্রান্ত করার মধ্যে একটা মজা আছে সেটা হিমুকে দিয়ে বুঝেছি, আর এই বিষয়টাই আমার কাছে হিমু চরিত্রের সবচেয়ে মজা লেগেছে।
ময়ূরাক্ষী উপন্যাসের কিছু কিছু উক্তি খুব ভালো লেগেছে-
-মহাপুরুষ হচ্ছে এমন একজন যাকে পৃথিবীর কোনো মালিন্য স্পর্শ করেনি।
-কিছু কিছু প্রশ্ন আছে যা কোনোদিন করা হয় না।
-যা পাওয়া যায় না তার প্রতি আমাদের আগ্রহের সীমা থাকে না। মেঘ আমরা কখনো স্পর্শ করতে পারি না বলেই মেঘের প্রতি মমতার আমাদের সীমা নেই।
প্রচ্ছদঃ ধ্রুব এষ, অনন্যা প্রকাশনী পৃষ্ঠা: ৭৫ দাম: ১৩৫ টাকা