বুধবার
৩রা আষাঢ় ১৪২৭, ১৭ই জুন ২০২০
কবিতা
রহিম উদ্দিন অভিমানী জাফরুল্লাহ
হ্যালো জাফরুল্লাহ চৌধুরী ,
আপনি তো বঙ্গবন্ধুর ভাই,
যুদ্ধের সময় লন্ডনে নিজের পাকিস্তানি পাসপোর্ট ছিঁড়েছেন,
প্রেসিডেন্ট জিয়ার ব্ল্যাক চেক, মন্ত্রীর পদও নেননি
তথাপি আপনার নামে এতো মামলা!
রাষ্ট্রদ্রোহী, ফল চোর, মাছ চোর, জমি দখলকারী, চাঁদাবাজি কিছুই তো বাকি রইল না।
পত্রিকা মারফত জানলাম, আপনার করোনা পজিটিভ
ডাক্তারদের অনুনয় বিনয়ের পরও নাকি ওষুধ নিচ্ছেন না
আপনি নাকি এও বলছেন,
যে ওষুধ সাধারণ মানুষ কিনে ব্যবহার করতে পারবে না,
সেটি আমি নিবো না,
প্রয়োজনে মারা যাবো,
সরকারকে ওষুধের দাম কমাতে হবে,
আমার কথা হলো আমাকে বিনামূল্যে দিতে হবে না,
দাম কমান যেন অসহায় মানুষের নাগালে থাকে।
এসব কেন করতে গেলেন?
আজকে শুনলাম, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, বিএনপির চেয়ারপার্সনও আপনার খোঁজ খবর নিচ্ছেন,
আপনাকে তো ফ্রিতে ওষুধ দিতে চেয়েছিলো রাষ্ট্র
তারপরও শুধু শুধু অভিমান করতে গেলেন
আপনি হয়তো জানেন না,
আপনার অভিমানে এদেশ এ জাতির কিছুই যায় আসে না!
আপনি দোয়া চেয়েছেন,
না চাইলেও দোয়া করতাম!
দু’হাত তুলে দোয়া করি
সুস্থ হয়ে আমাদের মাঝে ফিরে আসুন।
কেন জানেন? এ জাতি যা পায়, আপনাদের মত কিছু অভিমানী মানুষের কাছ থেকেই পায়।
সাহিন আক্তার কারিকর
নষ্ট ঘড়ির কাঁটা
প্রেমবোধ, আপ্লুত নারীর প্রশস্ত পথ ধরে
নেমে আসছে শ্রাবণ
ধ্বজাধারী যাজক অস্তিত্বের অন্তরায় সৃষ্টি করছে মস্তিষ্কে।
কাউন্সিল-মৈত্রীর নষ্ট ঘড়ির কাঁটা ধরে হাঁটছে ক্লিওপেট্রা
মোমবাতি হাতে রাস্তায় জর্ব চার্নক
পারগেটরি বাদাম ভাজা চিঁবুতে চিঁবুতে জর্দাপানের থুথু ফ্রেস্কো ও ভাস্কর্যের মেঝেই
তত্তে¡র অনুপুঙ্খে ঢেকে দিচ্ছে বিরুদ্ধাচরনের কয়েক দশক।
স্যালভেশনের হাত ধরে-
অনুতাপ ও কনফেশন।
ভার্জিন মেরির বমি পাচ্ছে
প্রিন্টিং প্রেস - এক্স রশ্মির তাপ নিয়ে ঘুমাচ্ছে যিশু...
পলিয়ার ওয়াহিদ
ক্ষুধামন্দার কারণ হতে পারে
যার মাথার উপর কাক বসে আছে
সে কীভাবে কোকিলের কথা ভাবে!
কবিতার রহস্য ধরতে গিয়ে
লোকটি ম্যাজিক দেখিয়ে দিলো।
উত্তরের বারান্দায় ডাকছে যে বিড়াল
তার সুর আপনার ক্ষুদামন্দার কারণ হতে পারে!
May cause anorexia
Crow
have been sit on whose head
How
he thinks about cuckoo!
Going
to catch mystery of poetry
The
man showed magic!
The
cat that's calling on the north balcony,
its
melody may cause your appetite!
শুভ্র সরকার
পাখিদের স্তনের নীচে গাঙের ছায়ায়
ভেসে ওঠা মীনের অভিনয়
১
হরিণটানা দুপুর- মাছ থেকে আলগা হয়ে আসা শালতার গাঙ চিৎ হয়ে পড়ে থাকে পাখিদের স্তনের নীচে। কলঘরে ধুয়ে রাখা স্নান- উড়তে থাকা কোঁচকানো পাঞ্জাবির পকেটে চুপচাপ দোল খায়। ছেঁড়া ফিতে স্যাণ্ডেল হাতে নিয়ে সমস্ত খুশবু শরীর সেলাইয়ে ঝুঁকে পড়লে- গাছেদের ছায়ারাও কোনও একদিকে খুব চলে যাবার সাধ নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে।
এদিকে, পাখিদের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় পাঠ করা ছুটির আবেদনে ছড়িয়ে পড়ে তোমার অপার ধানখেত।
২
দীর্ঘশ্বাসের মতো বেরিয়ে যাই
কিন্তু কার কাছে যাবো, আমি?
৩
শীত জানে: বসন্তেরও আছে- অতীত!
সোমনাথ বেনিয়া
ঊনত্রিশ পয়েন্ট ফাইভ- ২
যে শরীরে রূপ নেই, অপরূপ তার ঘূর্ণিবায়ু
ইচ্ছার ভিতর ক্যামেরার ম্রিয়মাণ ঝলকানি
কার কাছে রাখবে গুপ্ত বাসনার প্রিয় ...
দেখলে সন্ধ্যা, মুখের উপর নিম্নচাপ, পরিযায়ী
কোন পথে প্রতিক্রিয়া শেষে অকাল বর্ষণ
হিসেব না মিললে মনের চৌকাঠ ময়ূরের পেখম
পথচলতি লোকের কথা ফলিত বিজ্ঞান
নামতার ঘরে আড়ষ্ট জিভ আয়ুর ব্যর্থ গল্প ...
কমল কুজুর
অমলিন
তোমার হাসি ছাড়াই কেটে যায়
বিবর্ণ দিনগুলি,
এক দুই তিন এমনি করে
অযুত বছর!
শহরের পথগুলো ক্ষয়ে ক্ষয়ে যায়
অবিরত বিমর্ষতায়,
দেয়ালেতে নোনা ধরে আবার
নূতন করে!
পথকলিদের উচ্ছিষ্ট কুড়োনের ব্যস্ততা
যায় বেড়ে, আগের চেয়ে
প্রতিযোগিতাও হয় ভীষণ
পথকুক্কুরের সাথে!
ধীরে ধীরে বটগাছটার বয়স যায়
বেড়ে ঢের, বাড়ে শুকনো ডাল,
পাতাও পড়ে ঝরে তেমনি করে
তোমার তরে!
হৃদয়ের আঙিনায় শুধু বেজে যায়
তোমার নূপুরের সুর,
আগেরই মতোন রিনিঝিনি সুরে
হৃদয় নেয় কেড়ে!
অণুগল্প
একদিন আমরাও অমানুষ হয়ে যাবো
বঁঁধন অধিকারী
আমারও ইচ্ছা ছিলো মানুষ হয়ে বাঁচবো, কিন্তু ইতর শ্রেণির অমানুষগুলো আমাকে থাকতে দেয় নি। থাকতে দেয় নিমামরা মেয়েটাকেও! অসহ্য যন্ত্রনা নিয়ে মরে ছিলো টিকলির মা।
সেদিন ঘোর অমাবস্যা রাত, টিকলিকে ঘুম পাড়িয়ে... টিকলির বাবার অপেক্ষায় বসে ছিলো টিকলির মা। হঠাৎ একটা আওয়াজ শুনলো, মনের ভেতর কেমন যেন করে উঠলো? টিকলির মায়ের...
সামনে হাজির এলাকার কুত্তারা, সাথে কয়েকটি পোষাবিড়াল। টিকলি মা উঠতি বয়সী মহিলা, চোখে পড়েছে কুত্তাদের... আর রেহাই নেয়! ধর্ষণ করলো টিকলির মাকে! টিকলির বাবা তখনো বাড়ি আসেনি, যখন আসলো তখন ভাঙাঘরের একপাশে পড়ে ছিলো টিকলির মা। টিকলির বাবা বিমর্ষ হয়ে মুখের দিকে তাকিয়ে রইলো কিছুক্ষণ।
১২ বছর পর,
টিকলি এখন ক্লাস টেনে পড়ে, দেখতে শুনতে মোটামুটি ভালোই। যে কোনো বয়সী পুরুষ তার প্রেমে পড়তে বাধ্য। কিন্তু খারাপ চোখ তো শকুনেই দেয়। এবার রেহাই পেলনা। তাদেও উত্তরসূরীরা তাকেও ঠিক তার মায়ের মতোই ভোগ করলো।
বিচার চাইবার যায়গা নেই! বিচার করার লোকও নেই। যারা বিচার করে, তারা সবাই একই গোয়ালের গরু। ধাপে ধাপে বংশক্রমে লুটধর্ষণ করেই যাবে, কোনো কথা বলার থাকবেনা। আমরা গরীব সারা জীবনই মার খেয়ে যাবো। আমরা গরীব সারা জীবন ধর্ষিত হয়ে যাবো। একদিন এমনই করে আমরাও অমানুষ হয়ে যাবো।
উড়তে পারিনি
তপনকুমার দত্ত
তিড়িং তিড়িং করে উড়ে উড়ে এসে স্বপ্নময়দের গন্ধরাজ লেবু গাছে বসছে কত রঙে সাজা কুট্টি কুট্টি পাখিগুলো। স্বপ্নময় ভাবছে- দেখবো, নাকি মোবাইল ক্যামেরায় বন্দি করবো। ভাবতে ভাবতে মোবাইল ছাড়াই মজা পেল আরো। একটি দুটি কুরুক কুরুক করে মিষ্টি ডাকে জমিয়ে দিল কান। ভরিয়ে দিল প্রাণ। স্বপ্নময় আরো নীবিড় হতেই ফুরুৎ ফুরুৎ করে উড়ে গেল সব। একেই বলে পাখিদের ইচ্ছে। স্বপ্নময় বলে ওঠে- ‘যা। চলে গেলি। আবার আছিস।’ আর ভাবতে থাকে-হয়তো দূরে আরো কোথাও আরেক গাছে বসে গল্প-গানে জমিয়ে তুলবে ওরা। হয়তো ওদের মধ্যে সৃষ্টির উল্লাসে মাতবে দু’জন একান্ত কোনো ডালে।
স্বপ্নময় ঘরে ঢুকে বিড়- বিড় করে বলে-কত ইচ্ছে পূরণ হয়নি আজও। শুধু তোদের মতো উড়তে পারিনি বলে।
চিরসবুজ চলাচলে
বঙ্কিম কুমার বর্মন
এই দেহভার খুঁটে রাখি। সূর্যাস্ত আক্রান্ত ছিঁড়ে ফেলি উটকো ঝামেলায়। হাসির আস্তরণে জমে উঠছে ধূলোবালির সারল্য, তাতে প্রতিবেশী মাঠ ঢেলে দিয়েছে সতেজ উদার। শুধু কিছু অন্ধকারের নির্যাস দু’হাতে মেখে ততবার জিভে বুঝে নিয়েছি আগুনের স্বাদ। অসামর্থ্য সংসারের হালে পাঁচিলের যাবতীয় পেশি সেঁকে নিচ্ছে উষ্ণ বিরহের তরতাজা বুক। কোনো জলশব্দের গোপন প্রহর দু’পায়ে ঠেলে চলেছে আমার বয়স। শক্ত হাতের মুঠোয় রেখেছি ভিন্ন উড়ানের কাহিনি। যার সমস্তটাই শুরু অরণ্যের ভ‚মিতল দিয়ে। হেলে পড়ে বনাঞ্চল চুলখোলা বারান্দার সিঁথিতে। এইসব নিশিযাপন খুনসুটি ডানা ঝাপটায়, তাঁদের অপূর্ব ঋতুরা পাড়ি জমায় ময়ূরপঙ্খীতে। কতবার সিঁড়িও চালিয়েছে স্নেহময় শূন্যের সাইকেল। গলে যাচ্ছে নিশ্চিত কেউ আমাদের ফেরিময় পেয়ালায়। কিছু ভাবনার গলি টুকটাক খসে পড়ে, তাঁদের ডানায় রাশি রাশি নুনের যৌবন উদযাপিত হয়। আমি সেইসব স্পর্শ বিকিয়ে দিয়ে পিপীলিকার মিষ্টি শিকার শিখছি হৃদয়ের চিরসবুজ চলাচলে।
দারুণ
ReplyDeleteখুবই সুন্দর।
ReplyDelete